“জলনূপুরের রাত” বইয়ের ফ্ল্যাপ থেকে নেওয়া
কবিতা হচ্ছে সাহিত্যের নিগূঢ় নির্যাসমিশ্রিত ছান্দসিক-শৈল্পিক উপস্থাপন, যা মানুষের হৃদয়ে দোলা দিয়ে যায়। কথাসাহিত্য হচ্ছে ঘটনার পরম্পরায় নান্দনিক জীবনের বাঁকে বাঁকে ঘটে যাওয়া দিনলিপির রূপক উপস্থাপন। এই কথাশিল্পীকে আপাদমস্তক পড়তে গিয়ে আমার তাই মনে হয়েছে।
সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আকণ্ঠ গিলে খাওয়া লেখক মাহবুব খান। সমুদ্রের জলােচ্ছ্বাস এবং মংলা, কাটাখাল, কুমারখালী, দাউদখালী পরিবেষ্টিত নদীর উথালপাথাল ঢেউ মােকাবেলা করে জীবনকে অত্যন্ত নিবিড়ভাবে উপলব্ধি করেছেন তিনি। তাই তাঁর কথামালায় স্বভাবতই ফিরে এসেছে নদী।
লঞ্চ, নদী ও একটি বিমূর্ত রাতের ঘটনাবহুল সময় তাঁর লেখার মূল উপজীব্য। ঘটনাক্রমে লঞ্চযাত্রায় আবীরের সফরসঙ্গী হয় নূপুর। রাতের নিস্তব্ধতা ভাঙে পূর্ণিমার চাঁদ। হাতছানি দেয় তারাখচিত বিশাল আকাশ। আলাপচারিতায় সাহিত্য, রাজনীতি, সমাজের অন্তর্দাহ, সৃষ্টিতত্ত্ব, মুক্তিযুদ্ধ ও প্রেম সবই উঠে আসে। এগােতে থাকে গল্প উত্তেজনা ও উৎকণ্ঠার ভেতর দিয়ে। বাকিটা না হয় থাক পাঠকের জন্য।
উপন্যাসটি পড়ে আমার মনে হয়েছে কালজয়ী ঔপন্যাসিকদের প্রথম উপন্যাসের মতােই কথাশিল্পী ও কবি মাহবুব খানের ‘জলনূপুরের রাত’ পাঠকহৃদয়ে রেখাপাত করবে।
উপন্যাস ও লেখকের জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী হােক এই কামনা রইলাে।
এবিএম সােহেল রশিদ
অভিনেতা, কবি ও ঔপন্যাসিক