কল্পলোক নয়; বরাবর সে হেঁটে চলেছে বাস্তবতার খুব পাশাপাশি। কানিজ পারিজাত- লেখার ভুবনে ক্রমিক যাত্রায় ক্রমশই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে তীক্ষ্ণ ও দুঃসাহসী উচ্চারণে। তাঁর চরিত্রের মানব-মানবীরা বরাবরই মুখোশহীন ও খুব চেনা। তারা মুখরিত আলো-অন্ধকারের যুগপৎ সম্মিলনে যা কিনা মানব চরিত্রের প্রকৃত দৃশ্যায়ন। প্রবাস জীবনের ভিন্ন এক মাদকতার স্বাদ আজলা আজলা পান করে বুঁদ হয়ে থাকা আমিন মিয়ার ঘাসের উপর এলিয়ে পড়ার আচ্ছন্নতা- মুমুর বিষন্ন তার গল্পের হঠাৎ বাঁকবদল, পরস্ত্রীর একখানা হাত আর অচেনা ঘোরের ঘূর্ণাবর্তে আটকে থাকা মোকাব্বের, কঠিনে, কোমলে দুঃসাহসী দেবেশ, অবলীলায় পরিযায়ী হয়ে ওঠা মাতিয়া বানু- ‘সুলতানা বিবিয়ানা’ গল্পগ্রন্থটিতে মানব চরিত্রের পূর্ণ রূপায়ণ। চরিত্রের উচ্চারিত ও অনুচ্চারিত প্রকাশভঙ্গির সবটুকু নিয়ে কানিজ পারিজাতের প্রতিটি গল্প যেন মুগ্ধতার আশ্চর্য স্মারক। কানিজের গল্পের চরিত্রেরা যাপিত জীবনের কথা বলে, অলঙ্ঘনীয় প্রাচীর ভেদ করে জীবনের অদেখা, অপঠিত উপাখ্যানে গ্রন্থিত হবার সপ্ন দেখে। চলনে, বলনে প্রতিটি চরিত্র অন্ধকার ও আলোর চিরায়ত সত্যে প্রকাশিত- তীক্ষ্ণতায়, কাব্যিকতায়।