সবশেষে ফিরে আসি প্রিয় কবিতার কাছে,
ছায়া ঢাকা নির্জনে আজ উৎসব।
বিকেল থেকে কোকিল গাইছে!
কোকিলের কুহু, বাতাসের গান আর ফাল্গুনি পূর্ণিমা সবাই মিলেছে আজ উৎসব!
মেঘহীন, নির্মল হাওয়ার দিন,
শেষ হলো আরক্তিম সন্ধ্যা-
মিশে যাক পূর্ণিমার জোছনাধারা!
গোধূলীর রঙ মাখে লাজ-রাঙা চাঁদ,
আমাকে ডাকছে, শেষ উৎসব।
মৃত্যুর চেয়ে বড় কোনো উৎসব নেই!
ক’দিন ধরে প্রস্তুতি চলছে, উপস্থিত সকল প্রিয়জন
বহুদিন পর পুনর্মিলনের আনন্দ, হাসিখুশী মুখ
উৎসব আমেজ বাড়ে, উঠোনে সাজ সাজ রব।
বড় ডেকচিতে সেজেছে, শোক আবহের মাঝে-
ভরপেট গল্প হবে, সমাগত স্বজন সকল।
বিদায়ের ক্ষণ এগিয়ে আসে, স্তিমিত হয় উৎসব সুর।
উৎসবের রাতে নির্বাক, প্রিয় বারান্দায় শুয়ে থাকবো
আকাশ আর কবিতাকে দেখবো, জোছনা গায়ে মাখবো।
চারপাশে ভিড় করে প্রিয়জন যত।
মাথার কাছে জীবন সঙ্গী, প্রিয়তমা!
ডানে বামে সন্তান, ভাই-বোন ঘিরে আছে চারিধার!
অতি প্রিয় দাদু আমার দূর থেকে দেখে
কান্নাকে লুকোতে চলে যায় দৃষ্টির আড়ালে।
চারপাশে ভীড় করা স্বজনের কারো দিকে নজর যায় না।
আমি তাদের কথা শুনি না, আমি কাউকে দেখি না,
আমি শুধু চেয়ে থাকি প্রিয়তম মৃত্যুর দিকে।
তারপর শেষরাতে যখন নীরবতা নামে,
চাঁদ তার সবটুকু আলো ঢেলে করে আলিঙ্গন,
বাতাস ফেলে দীর্ঘশ্বাস, ফুল দেয় শেষ সুরভি,
মসজিদ হতে আজানের ধ্বনি ভেসে আসে
শেষ সে সুর শুনে অসীম তৃপ্তিতে ঘুমাই,
আর কোন প্রভাত দেখা হয় না আমার।
শুধু আমার অতি প্রিয়জন, আমার অতি কাছের মানুষ
নিশ্বাসে খোঁজে শেষ স্পন্দন, তখন নিস্পন্দ আমাকে ছোঁয়
নিস্তব্ধ ভোরের মৌনতা। কেঁদে ওঠে সারা ঘর,
অকস্মাৎ সন্ধ্যার উৎসব বদলে যায় শোকের সাগরে।
আমি জানি, মৃত্যুর চেয়ে বড় কোনো উৎসব নেই!
কতো স্বজন, প্রিয়জন থাকে সেই উৎসবে,
শুধু তুমি থাকো না। তুমি জানলেও না আমি চলে গেছি কোন ফাঁকে-
তারপর একদিন কোন এক আনন্দ- ক্ষণে
স্মৃতি রোমন্থনে, যখন জানবে আমি আর নেই,
হঠাৎ শোকে পাথর হবে তুমি,
শুধু তোমার জন্য সেদিন শোক উৎসব হবে!