আবেগপ্রবণ মানুষেরা যেমন খুব দ্রুত উত্তেজিত হয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে ফেলে, ঠিক তেমনি নিজের কারনে অন্যে কষ্ট পেলে তাকে শান্ত করতে সর্বস্ব নিয়ে নামে। রুস্তম এরকমই এক ব্যক্তিত্ব। রুস্তমের পরিবারে পান ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। ছোটবেলা থেকে সুখে-দুঃখে বাবা-মায়ের পান চাবানোর দৃশ্য দেখে বড় হয় সে। একসময় নিজেও অভ্যস্ত হয়ে পড়ে পানে। রুস্তমের কাছে মনে হতে থাকে, খারাপ পরিস্থিতিতে পান আরোগ্যের এক উপায় বৈ আর কিছু নয়। এ যেন এক ঐশ্বরিক মহাতরু! প্রেম-পূণ্য-মমতা বিনির্মাণে এর ক্ষমতা যেন প্রবল! বাবা-মার কঠিন শাসনও তাকে পান থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারে না। পরিণত বয়সে রুস্তমের বিয়ে হয় দিলরুবার সাথে। জীবন মানুষকে অনেক সময় আচানক এমন সব উপহার দেয় যা মানুষের কল্পনাতেও থাকে না। দিলরুবা, রুস্তমের জন্য এরকমই এক অনন্য উপহার। কিছুদিনের জন্য রুস্তমের পান খাবার বিষয়টি গোপন থাকে। কিন্তু ধোঁয়া যেমন হাড়ি থেকে একসময় বেড়িয়ে আসে, ঠিক তেমনি দীর্ঘদিনের অভ্যাস ধরা পরে যায় সহধর্মিণীর কাছে। যার জন্য ভালবাসা যত গভীর, তার জন্য অভিমানও ঠিক ততটাই প্রবল। খানিক মান অভিমান চলে তাদের মাঝে। কিন্তু দিলরুবার চরিত্র গভীর সমুদ্রের চেয়েও অতল, রংধনুর মতো পরিবর্তনশীল! একসময় রুস্তমের পান খাবার অভ্যাস রপ্ত করে ফেলে দিলরুবাও। পানে মানসিক শান্তি খুঁজে পেতে শুরু করে। ওদিকে প্রতাপশালী হিরন দিলরুবাকে বিয়ে করতে ব্যর্থ হয়ে প্রতিহিংসায় পুড়তে থাকে। দুর্বলচিত্তের মানুষেরা অন্যের দুর্বলতাকে নিজেদের বড় পুঁজি ভাবে। সেই দুর্বলতার সুযোগ খুঁজে হিরন। এক দুপুরে হিরন রুস্তমের সাথে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। উঠানে থাকা শাবল নিয়ে তেড়ে আসে রুস্তমের দিকে! এরপর? প্রবাহপথ পেরিয়ে শেষ ঠিকানা কী হয় দিলরুবার? মানুষ সবসময় সমাধান চায় না, বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমর্থনও চায়। ভাগ্যের মণিকোঠায় কী সেই সমর্থন লেখা থাকে দিলরুবার?
উপন্যাস মোড় নেয় ভিন্নরূপে!