নতুন নতুন দেশ ভ্রমণ করতে কমবেশি প্রতিটি মানুষেরই ভালো লাগে। ভ্রমণকারী সবাই ভ্রমণকাহিনি লিখতে পারেন—এমন কথা বলা যাবে না। সার্থক ভ্রমণকাহিনি লিখতে প্রয়োজন একটি আবেগপ্রবণ হৃদয়, কবিসুলভ মন, দার্শনিকের অন্তদৃষ্টি। রাশেদা খালেকের চারপাশের জীবন, জগৎ ও প্রকৃতিকে দেখার শক্তি অসাধারণ। তিনি চোখ দিয়ে দেখেন, মনের ক্যামেরায় ছবি তোলেন ও শব্দের ক্যানভাসে তা পাঠকেকে উপহার দেন। রাশেদা খালেক মূলত একজন কথাশিল্পী। কবি হিসেবেও খ্যাতি রয়েছে, তবে ভ্রমণকাহিনি রচনায় তিনি সিদ্ধহস্ত। ‘আমার দেখা জেনেভা ও প্যারিস’ গ্রন্থটি রচনা করে সুধী মহলে সমাদৃত হয়েছেন, পেয়েছেন পাঠকপ্রিয়তা। আমার দেখা স্বর্গছোঁয়া ভূমি রাশেদা খালেকের ভ্রমণকাহিনিমূলক দ্বিতীয় গ্রন্থ। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের আলোকেই তিনি গ্রন্থটি রচনা করেছেন। স্বর্গছোঁয়া ভূমি বলতে তিনি সম্ভবত ভারতের কাশ্মীর রাজ্যকে বোঝাতে চেয়েছেন। কাশ্মীর ভূ- স্বর্গ বলে খ্যাত। কাশ্মীর ছাড়াও তিনি ভারতের বহু জায়গায় ভ্রমণ করেছেন। স্বর্গছোঁয়া ভূমি সেই ভ্রমণেরই সোনালি ফসল। গ্রন্থটি পড়তে শুরু করলে কখনো মনে হবে এটি উপন্যাস, কখনো মনে হবে লেখকের সহযাত্রী হয়ে আপনিও তাঁর সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাই পড়া শেষ না-হওয়া পর্যন্ত বইটি হাত থেকে আমার দেখা স্বর্গছোঁয়া ভূমি গ্রন্থখানি নিঃসন্দেহে বাংলা সাতিহ্যের ভ্রমণ শাখার একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন।