একটা কাচ দেয়ালের মহল বানাব। মহলের চারধার থাকবে আয়না দিয়ে ঘেরা। মহলের উপরের আচ্ছাদনে আকাশ সর্বক্ষণ তার মুখখানি দেখতে পাবে। তারপর বর্ষাকালে যখন ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামবে, কাচঘেরা মহলের গায়ে গায়ে বৃষ্টি তার ইচ্ছেমতন আলপনা আঁকবে আর মহলের বাসিন্দাদের মনে হবে ছাদটা আসলে ইট পাথরের নয়, কাচের নয়, আয়নার নয়, ছাদটা আসলে বৃষ্টির! বলেছিল অমৃতা, মাঘ মাসের এক গভীর রাতে বন্ধুদের সাথে সাগর সৈকতে বসে। আকাশ সঙ্গে সঙ্গে সেই স্বপ্নে ভাগ বসিয়ে ফেলেছিল। বাকি বন্ধুরাও বৃষ্টিমহল নিজেদের নামে লিখিয়ে নেবার তোরজোড় শুরু করে দিয়েছিল নিমেষে। কী ভীষণ ছেলেমানুষ ছিল ওরা! এসব ছেলেমানুষি জীবনের একটা পর্যায়ে কেটে যায়। তবে কিছু কিছু বন্ধুপাগল মানুষের ছেলেমানুষি মনোভাব কেটে গেলেও বন্ধুমানুষি মনোভাবটা বুঝি কখনওই আর কাটে না। তাই তো বাস্তবতার জাঁতাকলে প্রতিনিয়ত পিষ্ট হবার পরেও এই ধূলোবালি মাখা জীর্ণ, ধূসর পৃথিবীর ছাদে ওরা ছয়জন আজো বুকের ভেতর কাচ দেয়ালের এক বৃষ্টিমহল নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। বৃষ্টিমহল বেঁচে থাকুক চিরকাল ওদের হৃদয়ে , বৃষ্টিমহল বেঁচে থাকুক পৃথিবীর সব বন্ধুপাগল মানুষদের হৃদয়ে!