নির্বাসিত নির্বাণে কবি খোন্দকার শাহ্ আলম—এর তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ। মূলত তিনি কবি। উপন্যাস লেখেন। প্রবন্ধ ও অনুবাদ—সাহিত্যও চর্চা করেন। জীবন অনেকের কাছে কেবল দৈনন্দিন, আটপৌরে সময়ের আবর্তন যেখানে বাহ্যিক আলো—অঁাধারির খেলা চলে প্রতিনিয়ত। কিন্তু এই কবির কাছে জীবন যতটা আটপৌরে, তারচেয়ে অনেক বেশি বোধের অনুভূতিতে অন্তরিন। সেখানে চলে লয় ও তালের এক অন্য আলোর খেলা। জীবনানুভূতি সেখানে দুঃখ—কষ্টের, আনন্দ—বেদনার আশা—নিরাশার তুলিতে প্রেমের নন্দনকানন অঁাকে। বাহির থেকে তা উপলব্ধি করা কঠিন। মানুষের জীবন শিখার মতো; যা আপাত, যা অনিত্য, যা ক্ষণিক, তাকে শাশ^ত ভেবে মানুষ ভুল করে তার পেছনে ছোটে। কবিও ছুটেছেন বহুকাল। এই কাব্যগ্রন্থের কবিতায় মানবজীবনের সেইসব আটপৌরে ভুল ভেঙে বেরিয়ে আসার সুর বেজে উঠেছে। এ গ্রন্থের কবিতাগুলো প্রেম, বিরহ, অভিমান, বিচ্ছেদ; আবার কখনো সমসাময়িক সময়—ভাবনার দাবদাহে পুড়ে রূপান্তরিত হয়েছে অন্তর্নিহিত আলোকে। সেই আলোকধারায় প্রেমানুভূতি, জীবনানুভূতি ও শিল্পানুভূতির মিথস্ক্রিয়া কবি—মনে প্রবাহিত হয়ে ভাবনার কোনো এক ক্ষণে এসে কবিতা হয়ে ঝরে পড়েছে। কবিতা—চর্চার ধারাবাহিকতায় এবারের কবিতাগুলো বোধের সেই নান্দনিক রথে চড়ে গমন করেছে নির্বাসিত নির্বাণে।