ক্যাবল কারটি ট্যাবল-মাউন্টেনের দিকে উঠতে থাকে। মনে হয় মাটির পৃথিবীকে ছেড়ে আকাশের দিকে উঠে যাচ্ছে। এখান থেকে আটলান্টিক মহাসাগর আর কেপটাউন শহরটি অপূর্ব জেলায়। তখন সূর্যের অজস্র রঙিন আলো সমুদ্রের জলরাশিতে অসংখ্য তরঙ্গমালা আর আলোর বন্যায় ভাসিয়ে তোলে। কখনো টুকরো-টুকরো হীরকখণ্ড আর ঝলমলে আকাশের তারারা যেন সাগরজলে নেমে আসে। সূর্যটা একটু পরে সাগরে ডুবে যাবে। এখান থেকে সূর্যাস্তটা অপূর্ব সুন্দর দেখায়। অন্তগামী সূর্য সব রং ছড়িয়ে যেন সমুদ্রের বিশাল জলরাশিতে ধীরে ধীরে ডুবে যেতে থাকে। এ অপরূপ দৃশ্যে সবাই বিভোর হয় । কিছুক্ষণের মধ্যে সূর্যটা পানিতে অদৃশ্য হয়ে যায়। কিন্তু আকাশজুড়ে সূর্যের রক্তিম আভা ছড়িয়ে থাকে। আকাশের সে রক্তিম আভা সমুদ্রের জলরাশিকে আরেক মায়ার জগতে নিয়ে যায়।
প্রাচীনকাল থেকে স্টোন ফরেস্টের এ পাথরগুলো এভাবে দাঁড়িয়ে আছে। কোনো-কোনো পাথর দেখলে মনে হয় কোনো নিপুণ শিল্পীর হাতে নানা কারুকাজে ভরা এসব পাথর-শীলা। খোদাই করে বিশ্বের সব দেশ-বিদেশের মানচিত্র যেন এখানে এঁকেছে। আবার মনে হয় খণ্ড-খণ্ড মেঘ আকাশের কোলে ভেসে ভেসে বেড়ায়। সেখান থেকে একখণ্ড মেঘ পাথরের মাথায় আটকে পড়ে আছে, আবার যে-কোনো সময় ছুটে যেতে পারে। কিন্তু কালের পর কাল এরা এভাবে দাঁড়িয়ে আছে গভীর মমত্ববোধে। কোনো-কোনো পাথর এমন করে দাঁড়িয়ে আছে যেন .এক-একটা পাহাড়ের ঢাল, যেখানে বিপদে-আপদে প্রাণিকূল আশ্রয় নিতে পারে।