কবি দেবদাস কর্মকারের সাহিত্যচর্চা বিশেষ করে কবিতা লেখার শুরু কিশোর বয়স থেকেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলাভাষা ও সাহিত্যে অনার্সসহ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন কৃতিত্বের সঙ্গে। পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদের মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। তিনি দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় উচ্চ পদে চাকরি করলেও কাব্যচর্চা তার মজ্জাগত। বলা যায় স্বভাবজাত। কাব্যসৃজনে দেবদাস কর্মকার কবি জীবনানন্দ দাশের মতোই নিসর্গপ্রেমী। প্রকৃতি ও প্রাণী জগতের বর্ণ গন্ধ ছন্দ নিয়েই কবির কারবার। তার কাব্যের রোমান্টিক বৈভব প্রশ্নাতীত। জীবনপ্রবাহকে প্রকৃতির অণুসঙ্গ করে তিনি একজন ভাস্করের মতো তিলতিল করে শব্দ দিয়ে কবিতার ভাস্কর্য গড়েন। তার কবিতা ভাব মাধুর্যে সমৃদ্ধ। কাব্য দর্শনে তিনি প্রাণ-প্রকৃতিমুখী। কবিতার দেহ গঠনে উপমা উৎপ্রেক্ষা অণুপ্রাসের সমাহারে চিত্রকল্প নির্মাণ এবং মুক্ত ছন্দের দোলায় তিনি সিদ্ধহস্ত। কবি দেবদাসের কবিতা পাঠে অন্তঃসলীল ভালোলাগার এক রেশমী অনুভূতি হৃদয়ের চিন্তাজগতে নাড়া দেয়। তিনি আশাবাদী এক নিভৃতচারী জীবনবাদী কবি।
অশোক দত্ত
অস্ট্রেলিয়া
তোমার মেঘবৃত্ত তোমার মেঘবৃত্ত এই মৃত্তিকা জুড়ে কতো যে অঙ্কুর
জীবনেরে ডেকে আনে, খুদে কাঁকড়া, চিংড়ির পোনা
ধানের চারার শিকড়ে শিকড়ে শামুকের সাথে একসাথে,
বাতাসের ঢেউ সবুজের মাঠে অপরূপ এক জীবন কাহিনি ।
স্বপ্নের হাটে বেলা চলে যায় বিকেলের ছায়া পরে
শিরীষের গাছে পাখি বসে ফের হৃদয় বেদনা মেখে,
শেকড়ের মাটি খেয়ে গেছে ঢেউ, ভুলে গেছে নদী রাতের আঁধারে,
সরানি পরা জলের ভিতরে গলদার চোখে জ্বলে নক্ষত্রের সাথে।
যখন সময় হয়েছে নিঝুম, মাছরাঙা সাপ ক্ষীণ খালের ভিতরে,
ক্ষুধার আগুনে খোঁজে পুঁটি মাছ,
রঙিন শরীর তার ডোরাকাটা হলুদে কালোয়।