জীবনদর্শন ও ইসলাম

৳ 127.00

লেখক ড. আব্দুর রহমান রাফাত পাশা রহ.
প্রকাশক শব্দতরু
ভাষা বাংলা
পৃষ্ঠার সংখ্যা ৯৬
সংস্কার 1st Published, 2021
দেশ বাংলাদেশ

সমাজের সঙ্গে জনসমাজের নাড়ীর সম্পর্ক রয়েছে। এ সম্পর্ককে এড়িয়ে চললে কিংবা অস্বীকার করলে প্রথমোক্তের মৃত্যু অপরিহার্য। এ জন্যে সমাজ সংস্কার ব্যক্তি-সংষ্কারের ওপর যতখানি নির্ভরশীল, বাইরের কোন বিষয়ের ওপর ততখানি নয়। অন্য দিকে রাষ্ট্র হলো সমাজের মুখপাত্র এবং তার স্বার্থের প্রতিভূ। এ কথা থেকে স্বতঃসিদ্ধ হয় যে, রাষ্ট্রের প্রকৃতিতে প্রতিবিম্বিত হয় সমাজের স্বভাব। জনসমাজকে ঘিরেই প্রতিষ্ঠিত হয় একটি সমাজ। তেমনি সমাজকে অবলম্বন করেই জন্ম নেয় একটি দেশ, একটি রাষ্ট্র।একটি দেশের উন্নতি-অনুন্নতি নির্ভর করে সে দেশের জনগণের ওপর; যে জাতি যত সভ্য , সে দেশ তত উন্নত। আমাদের দেশ কতটা উন্নত, জাতি হিসেবে আমরা কতটা সভ্য‌—সে বিবেচনা পাঠকই করবে। তবে এটুকু নিশ্চিত যে, বর্তমানে আমাদের ব্যক্তি-জীবন, সমাজ-জীবন ও রাষ্ট্রীয় জীবনের পরতে-পরতে ছড়িয়ে আছে হরেক রকমের অসংগতি। এ অসংগতি লুকিয়ে আছে আমাদের চিন্তায়, আমাদের ভাবনায়; আমাদের মন-মননে ও মানসিক অঙ্গনে; আমাদের চলনে-বলনে, আচরণে-উচ্চারণে এবং যাপিত জীবনের নানাবিধ প্রাঙ্গণে। ইসলামের বয়ানে কীভাবে এসব অসংগতি কাটিয়ে একজন সুন্দর ও পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা যায়, তারই অনবদ্য গ্রন্থনা— জীবনদর্শন ও ইসলাম।

১৯২০ খ্রিস্টাব্দে উত্তর সিরিয়ার আরিহা শহরে জন্ম। জন্মের চার মাসের মাথায় বাবাকে হারান। চার বছর বয়সে মায়ের অন্যত্র বিয়ে হয়ে গেলে দাদার কাছেই লালিত-পালিত হন। সিরিয়ার প্রাচীনতম শরয়ী শিক্ষাগার হালাব শহরের মাদরাসা খুরভিয়ায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পড়াশোনা করেন। তারপর মিসরের আল-আজহার ইউনিভার্সিটি থেকে অর্জন করেন উসূলে ফিক্হের ওপর উচ্চতর ডিগ্রি। আল-আজহারে পড়াশোনা শেষ করে কায়রো ইউনিভার্সিটিতে আরবি ভাষা ও সাহিত্যের উচ্চতর গবেষণা সম্পন্ন করে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। ড. আবদুর রহমান রা‘ফাত পাশা শিক্ষকতা, সাহিত্যসাধনা ও গবেষণাতেই জীবনভর সম্পৃক্ত ছিলেন। এক সময় দামেস্ক ইউনিভার্সিটির কলা অনুষদের প্রভাষক ছিলেন। ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে সৌদি আরব সফরে গেলে রিয়াদের ইমাম মুহাম্মদ ইবনে সউদ ইউনিভার্সিটি থেকে অধ্যাপনার প্রস্তাব পেয়ে সেখানেই স্থির হয়ে যান। আরবি ভাষার সেবা, সাহিত্যসাধনা ও গবেষণার পাশাপাশি মুহাম্মদ ইবনে সউদ ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে সেখানেই কাটিয়ে দেন জীবনের বাকি বাইশটি বছর। ইসলামি সাহিত্যের উৎকর্ষ বৃদ্ধিতে ড. রা‘ফাত পাশা প্রধানত দুটো ভাগে কাজ করেছেন। এক. ইসলামের স্বর্ণযুগে রচিত দাওয়ামূলক কবিতা সম্ভারকে শিল্পের নিক্তিতে মেপে সমালোচনা। দুই.

ইসলামের অতীত ইতিহাসকে খ্যাত ও বিস্মৃত মনীষীদের জীবনীর আদলে অনন্য রচনাশৈলিতে উপস্থাপন।জীবনী সাহিত্যে রা‘ফাত পাশা যে কাজগুলো করে গেছেন, তা আজ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। ‘সুয়ারুম মিন হায়াতিস সাহাবা’, ‘সুয়ারুম মিন হায়াতিস সাহাবিয়াত’ ও ‘সুয়ারুম মিন হায়াতিত তাবেয়িন’ শিরোনামের তিনটি গ্রন্থ তাঁকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। এ ছাড়া ‘আদ-দীন আল-কাইয়িম’, ‘লুগাত আল-মুসতাকবিল’-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ আরও বিপুল কাজ করে গেছেন তিনি। ৬৬ বছর বয়সে প্যারালাইসিসের কারণে ড. রা‘ফাত পাশার শরীরের একাংশ বিকল হয়ে যায়। ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি সময় ডাক্তারের পরামর্শে কিছু দিনের জন্য হাওয়া বদলের উদ্দেশে তিনি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে যান এবং সেখানেই জুলাইয়ের ১৮ তারিখ মুতাবেক ১১ জিলক্বদ ১৪০৬ হিজরী শুক্রবার রাতে ইন্তিকাল করেন। ইস্তাম্বুলের ঐতিহাসিক ‘ফাতেহা’ গোরস্তানে তাঁকে সমাহিত করা হয়, যেখানে শুয়ে আছেন বিপুল সংখ্যক সাহাবী আজমাঈন ও তাবেয়িনে কেরাম।


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন →
বই সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাসা বা মতামত থাকলে আমাদেরকে জানান
শেয়ার করুন

লেখকের অন্য বইসমূহ

প্রকাশকের অন্য বইসমূহ