ফ্ল্যাপ
ঢাকা বিভাগের শেষ দক্ষিণের জনপদ- যেখানে মধুমতি, ঘাঘর মাতৃস্নেহে সবুজে শ্যামলে প্রাণবন্ত করে রাখে সেই গোপালগঞ্জ জেলায় কেটেছে কবি দীন মুহাম্মদের শৈশব কৈশোর। আর এই কারণেই কবি’র কবিতায় প্রেম আর নিসর্গ জড়াজড়ি করে আছে অনন্য কুশলতায়। ‘কোনো এক শ্রাবণ রাতে’ কাব্যগ্রন্থ তার প্রামান্য দলিল।
কবি ও ঔপন্যাসিক দীন মুহাম্মদ রোমান্টিক ঘরাণার কবি। শুধু রোমান্টিকতাই নয় এর পাশাপাশি ট্রাজেডিও তাঁর কবিতায় বিশাল জায়গা দখল করে আছে। যা নিবেদিত হয়েছে কোনো এক মানস সুন্দরীর কনক পাদপদ্মে। যে উর্বশীকে ঘিরে কবি সমগ্র কাব্যগ্রন্থের ফুলেল নৈবেদ্যে তাকে মহিমান্বিতা করে তুলেছেন। ‘কোনো এক শ্রাবণ রাতে’ কবি আসমুদ্রহিমাচল জুড়ে প্রেয়সী বন্দনার বল্গাহীন আশ্বমেধের ঘোড়া ছুটিয়ে দিয়েছেন। কবিকে আবেগের এই কাঁটাতার মাড়িয়ে নেমে আসতে হবে কবিতার সার্বজনীন প্রসন্ন সমতলে। পাখা মেলতে হবে ভাবনার নীল আসমানের দশদিগন্ততে। যা একজন কবি’র কাছে পাঠক মাত্রেই কাম্য।
সুখপাঠ্য কবি’র কবিতায় উপমা, তুলনা উৎপ্রেক্ষা ও অলংকার ব্যবহারে কবি যথেষ্ট দক্ষতা দেখিয়েছেন। যা তাঁর কবিতার পাঠক মাত্রেই অনুধাবন করতে পারবেন। পরাবাস্তববাদী ভাবনায় তাড়িত কবি তাঁর প্রেয়সীকে হাজার বছর আগে একবার দেখেছিলেন। তারপর আর চোখে চোখ রাখতে পারেননি। আশাবাদী কবি আবার তাকে দেখতে পাবেন কোনো এক পাতাঝরা দিনে।
কবি দীন মুহাম্মদ ছান্দসিক কবি। তাঁর সিংহভাগ কবিতায়ই ছন্দের কারুকাজ লক্ষ্য করা যায়। তবে গদ্যছন্দেও তাঁর কবিতায় সমান তালে ধাবমান নায়েগ্রা জলপ্রপাতের উচ্ছাস।
‘কোনো এক শ্রাবণ রাতে’ কবি’র ষষ্ঠ প্রকাশনা দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ। আমার বিশ্বাস এই সাধনায় নিষ্ঠাবান কবি আরো বহুদূর যাবেন। জয় করে নেবেন পাঠকপ্রিয়তা। জয় হোক কবিতার। কবি’র জন্য শুভকামনা।
মাহবুব খান
কবি, ঔপন্যাসিক
প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব
অনুশীলন সাহিত্য পরিষদ।