রাত দুটো পঁচিশ মিনিট। এই মধ্যরাতে কে কাঁদে! তমাল বিছানায় উঠে বসে। মনে হচ্ছে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আওয়াজটা আসছে। একটা মেয়ে যেন ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। তমাল বালিশের পাশ থেকে টর্চটা হাতে নিয়ে দরজা খুলে সিঁড়ির ওপরে দাঁড়ায়। উত্তর-পশ্চিম কোণে বকুল গাছটার নীচে দাঁড়িয়ে একটি ঘোমটা পরা মেয়ে কাঁদছে। তমাল ভূত-পেত্নী বা কুসংস্কারে বিশ্বাস করে না। তমাল এগিয়ে গেল। তমাল যত আগায় নারী মূর্তিটি সামনে আগায়। আগাতে আগাতে একেবারে পেছনের দীঘির ওপাশে চালতা গাছের ছায়ায় অদৃশ্য হয়ে যায়। তমাল চোখ কচলায়। কিছুই বুঝতে পারে না। ফিরে আসে ঘরে।
পরের মধ্যরাতে আবার সেই কান্নার শব্দে ঘুম ভাঙ্গে তমালের। এবার তমাল দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয় আজ সে দেখবেই ব্যাপরটি কি! টর্চ হাতে বেরিয়ে দেখে মেয়েটি গাছটির ওপাশে দাঁড়িয়ে মুখে আঁচল চেপে কাঁদছে। ঝিঁঝিঁ পোকা ডাকার শব্দে সাথে কান্নার শব্দটি কেমন যেন অপার্থিব শোনায়। এ কান্না যেন ব্যথা নিংড়ে বের করার মতো। তমাল হাটতে থাকে দ্রুত। নারী মূর্তি সামনে যেতে যেতে দীঘির ভেতরে নেমে অদৃশ্য হয়ে যায়। তমাল টর্চের আলো ফেলে দীঘির জলে। নিস্তরঙ্গ দীঘির জল। তমাল ঘোর লাগা চোখে তাকিয়ে থাকে। হঠাৎ ওর খেয়াল হয় ও এতো রাতে দীঘির পাড়ে দাঁড়িয়ে। তমাল হাতের ঘড়িটি দ্যাখে রাত তখন দুটো চল্লিশ মিনিট।