“…বঙ্গবন্ধু তাঁর রাজনৈতিক জীবনে হঠকারী কোন উদ্যোগ নেননি। আবার কোন রাজনৈতিক কর্মসূচির আপাত ব্যর্থতার জন্য অনুশােচনা করেননি। কারণ জনমত ও সময়ের প্রতি তিনি সবসময় তীক্ষ নজর রাখতেন। নাতিদীর্ঘ জীবনে তাঁর সাহসের অনেক ঘটনা আমরা জানি। নিজের জীবনের মায়া তিনি অনেক আগেই ত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু কোনােভাবেই তাঁকে রােমাঞ্চভিলাষী বলা চলে না। তিনি অধৈর্য হননি। মাতৃভূমির স্বাধীনতার অবিচল লক্ষ্যে ধীরে ধীরে পরিকল্পিতপন্থায় দেশের আপামর জনতার মাঝে তার। রাজনৈতিক দর্শন প্রচার করেছেন। দীর্ঘ পথপরিক্রমায় সত্তরের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার আইনানুগ , গণতান্ত্রিক ভিত্তি নির্মাণ করেন। পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠীর স্বৈরাচারী মানসিকতার সঙ্গে তিনি ভালােভাবে পরিচিত ছিলেন। আর তাই জানতেন চূড়ান্ত পর্যায়ে সম্মুখ সমর অবশ্যম্ভাবী। এই ক্ষেত্রে বিদেশি রাষ্ট্রের সহায়তা অত্যন্ত জরুরি। ভূ-রাজনৈতিক বিবেচনায় বঙ্গবন্ধু ভারতকে বেছে নিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর অতুলনীয় নেতৃত্বে পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শােষণের বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই করে ত্রিশ লক্ষ শহীদের আত্মদান ও চার লক্ষ মা-বােনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বিদ্যমান একটি রাষ্ট্র কাঠামাে ভেঙে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ছিল তৃতীয় বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী ঘটনা…।”
“.মুক্তিযুদ্ধ বাঙ্গালিদের কাছে ছিল ন্যায় যুদ্ধ। প্রশ্ন, কোন্ যুদ্ধ ন্যায় যুদ্ধ এবং কোনটি ন্যায় যুদ্ধ নয়? তা নির্ধারণ করা বেশ দুরূহ। এ বিষয়ে সবার একমত হওয়াও হয়তাে সম্ভব নয়। এ বিতর্ক বেশ পুরনাে। শান্তিবাদীদের দৃষ্টিতে যুদ্ধ মাত্রই নীতি বিরুদ্ধ বিষয় অন্যদিকে বাস্তববাদীরা মনে করেন যুদ্ধের সঙ্গে নৈতিকতার কোন সম্পর্ক নেই। এমনি চরম বিপরীতমুখী বক্তব্যের মধ্যবর্তী অবস্থানে আছে ন্যায় যুদ্ধপন্থি চিন্তাবিদগণ…।”