“প্রসঙ্গ : ব্লাসফেমি আইন” বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ
এই গ্রন্থের লক্ষ্য বাংলাদেশের অন্যতম ধর্মান্ধ মৌলবাদী রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী প্রস্তাবিত ব্লাসফেমি আইনের মর্মবস্তু, উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করা। জামায়াত পঞ্চম জাতীয় সংসদে ১৯৯২ সালের জুলাই মাসে ১৮৬০ সালের বাংলাদেশ দন্ডবিধি সংশােধন করে ২৯৫ (ক) ধারার সঙ্গে পাকিস্তানে বহাল আইনের অনুকরণে দুটো নতুন ধারা- ২৯৫ (খ),ও:২৯৫. (গ) সংযােজনের প্রস্তাব করে যাতে কোরআন ও হযরত মহম্মদের অবমাননার জন্যে যথাক্রমে যাবজ্জীবন ও মৃত্যুদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত ব্লিলটি বাছাই কমিটি ঘুরে সংসদে উত্থাপনের মতাে অবস্থায় উপনীত হলে ১৯৯৪ সালের মাঝামাঝি জামায়াতসহ বিভিন্ন স্বাধীনতা বিরােধীদল সারাদেশে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। বিভিন্ন ব্যক্তি, সংগঠন, মতাদর্শের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত উপায়ে ধর্মদ্রোহিতার অভিযােগ তুলে ফতােয়া জারি করে তারা প্রমাণ করতে তৎপর হয় যে, এদেশে ব্লাসফেমি আইনের প্রয়ােজন রয়েছে। এই রকম একটি পটভূমিকায় এদেশের প্রাগ্রসর, চিন্তাশীল, সেকুলার, সমাজ সচেতন বুদ্ধিজীবীরা প্রস্তাবিত এই আইনের বিভিন্ন দিক, তার সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া, ইতােমধ্যে বিভিন্ন দেশে এই আইনের প্রয়ােগ ও অপপ্রয়ােগ, ব্লাসফেমির ধারণার উৎস, এর রাজনীতি প্রভৃতি বিষয়ে ব্যাপক আলােচনার সূত্রপাত করেন। এই গ্রন্থে এ ধরনের কয়েকটি প্রবন্ধ সংকলন করা হয়েছে।