বাইবেল কোরআন ও বিজ্ঞান

৳ 280.00

লেখক ড. মরিস বুকাইলি
প্রকাশক জ্ঞানকোষ প্রকাশনী
আইএসবিএন
(ISBN)
9848485449
ভাষা বাংলা
পৃষ্ঠার সংখ্যা ৩৩৯
সংস্কার Reprint, 2015
দেশ বাংলাদেশ

“বাইবেল কোরআন ও বিজ্ঞান “বইটির গোড়ার কথা:
একত্ববাদী বলে পরিচিত তিনটি ধর্মেরই নিজ নিজ ধর্মগ্রন্থ রয়েছে। যারা বিশ্বাসী তারা ইহুদী, খ্রীস্টান অথবা মুসলমান যা-ই হােন না কেন, এইসব সঙ্কলিত দলিল তথা ধর্মগ্রন্থ হচ্ছে তাদের বিশ্বাসের বুনিয়াদ। তাদের কাছে এইসব ধর্মগ্রন্থ হচ্ছে সেই ধরনের আসমানী ওহীর লিপিবদ্ধ রূপ, যে ধরনের ওহী হজরত ইবরাহিম (আঃ) এবং হজরত মূসা (আঃ) সরাসরি আল্লাহর কাছ থেকে পেয়েছিলেন এবং যে ওহী হজরত ঈসা (আঃ) লাভ করেছিলেন ফাদার বা পিতার নামে : আর হজরত মােহাম্মদ (দঃ) লাভ করেছিলেন প্রধান ফিরিস্তা জিব্রাঈলের মাধ্যমে।
ধর্মীয় ইতিহাসের নিরপেক্ষ বিচারে তাওরাত, জবুর, ইঞ্জিল (অর্থাৎ বাইবেলের পুরাতন ও নতুন নিয়ম) এবং কোরআন একই ধরনের ওই বা প্রত্যাদেশপ্রাপ্ত ধর্মগ্রন্থ। মুসলমানেরা যদিও এই নীতি মেনে চলেন কিন্তু পাশ্চাত্যের ইহুদী-খ্রস্টান সংখ্যাগুরু সমাজ কোরআনকে প্রত্যাদেশপ্রাপ্ত ধর্মগ্রন্থ হিসাবে স্বীকার করতে চান না। পরস্পরের ধর্মগ্রন্থ সম্পর্কে এই যে দৃষ্টিভঙ্গি, খুব সম্ভব এর থেকেই বােঝা যাবে যে, একটি ধর্মীয় সমাজ অপর ধর্মীয় সমাজ সম্পর্কে কি ধরনের মনােভাব পােষণ করে।
হিব্রু ভাষার বাইবেল হলাে ইহুদীদের পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থ। উল্লেখ্য যে, হিব্রু বাইবেল খ্রীস্টানদের বাইবেলের অন্তর্ভুক্ত ওল্ড টেস্টামেন্ট বা পুরাতন নিয়ম থেকে কিছুটা আলাদা। খ্রীস্টানরা এই ওল্ড টেস্টামেন্টে এমন বেশ কয়েকটি অধ্যায় সংযােজিত করেছেন যা হিব্রু বাইবেলে নাই। এই সংযােজনা কিন্তু বাস্তবে ইহুদী মতবাদে তেমন কোনাে পরিবর্তন ঘটাতে পেরেছে বলে মনে হয় না। কেননা, নিজস্ব হিব্রু বাইবেলের পরে আর কোনাে ধর্মগ্রন্থ অবতীর্ণ হওয়ার কথা ইহুদীরা স্বীকার করেন না।
খ্রীস্টানরা হিব্রু বাইবেল যেমনটি ছিল তেমনিভাবে সেটিকে গ্রহণ করেছেন এবং তার সঙ্গে আরও কিছু অধ্যায় সংযুক্ত করে নিয়েছেন। অন্যদিকে খ্রীস্টানরা নিজেরাও কিন্তু যীশুর (হজরত ঈসার) ধর্মপ্রচারের সাথে সংশ্লিষ্ট এবং মানুষের কাছে পরিচিত সবগুলি রচনাকে ধর্মগ্রন্থ হিসাবে গ্রহণ করেন নাই। যীশুর জীবনী ও শিক্ষা-সংক্রান্ত পুস্তকের সংখ্যা কম ছিল না। কিন্তু গির্জার পুরােহিত-অধিকারীরা
তাওরাত বলতে বাইবেলের পুরাতন নিয়মের পঁাচটি পুস্তককে বােঝায়, এগুলি হজরত মূসার পটিয়াক নামে পরিচিত। যথা (বাংলা বাইবেল অনুরে) : আদিপুস্তক, যাত্রাপুস্তক, গণনাপুস্তক, লেবীয় পুস্তক ও দ্বিতীয় বিবরণ।

ড. মরিস বুকাইলি ১৯২০ সালের ১৯ জুলাই ফ্রান্সে জন্মগ্রহণ করেন। পেশায় তিনি একজন চিকিৎসক। ফ্রেঞ্চ সোসাইটি অব ইজিপ্টোলজির (মিশরত্ত্ব) সদস্য এই চিকিৎসক একজন গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিশেষজ্ঞও ছিলেন। বিশ্বজুড়ে তিনি একজন প্রসিদ্ধ চিকিৎসক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তিনি সৌদি বাদশা ফয়সাল বিন আব্দুল আজিজের পারিবারিক চিকিৎসক হিসেবে নিযুক্ত হন ১৯৭৩ সালে। মিশরের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত ও তাঁর পরিবারের সদস্যরাও ড. বুকাইলির কাছে চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন। তিনি মেডিসিন চর্চা করেছেন ১৯৪৫ সাল থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত। তবে তাঁর কর্মজীবন শুধু চিকিৎসা জগতেই সীমাবদ্ধ নয়, নাম কুড়িয়েছেন একজন প্রসিদ্ধ গবেষক হিসেবেও। মরিস বুকাইলি ধর্ম ও বিজ্ঞানের মাঝে বিদ্যমান সম্পর্কের একজন একনিষ্ঠ গবেষক ছিলেন। তাঁর গবেষণার মূল বিষয়বস্তু ছিল ধর্ম, বিশেষত ইসলাম এবং আধুনিক বিজ্ঞানের মাঝে বিদ্যমান সম্পর্কগুলোর বাস্তবধর্মী বিশ্লেষণ। এই গবেষণা চলাকালে তিনি বিংশ শতাব্দীতে আবিষ্কৃত বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক মতবাদ ও পদ্ধতির সাথে কোরআনে উল্লেখিত বক্তব্যের সাদৃশ্য দেখতে পান। অতঃপর প্রকাশিত হয় মরিস বুকাইলির বই ‘বাইবেল, কুরআন এন্ড সায়েন্স’। এই বইয়ে তিনি দেখান যে, কোরআন একটি ঐশ্বরিক গ্রন্থ, যাতে বৈজ্ঞানিকভাবে সঠিক তথ্য রয়েছে। এই মতবাদ থেকে জন্ম নেয় ‘বুকাইলিজম’ বা বুকাইলিবাদ। ড. মরিস বুকাইলি এর বই সমগ্র বিশ্বব্যাপী সাধারণ পাঠক ও গবেষকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। ১৯৭৬ সালে প্রকাশিত ‘বাইবেল, কুরআন এন্ড সায়েন্স’ বিশ্বের প্রায় ১৭টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। আরো প্রকাশিত ড.

মরিস বুকাইলি এর বই সমূহ হলো ‘দ্য কুরআন এন্ড মডার্ন সায়েন্স’, ‘হোয়াট ইজ দ্য অরিজিন অব ম্যান’, ‘মাম্মিজ এন্ড ফারাওজ: মডার্ন মেডিকেল ইনভেস্টিগেশনস’ ইত্যাদি। মরিস বুকাইলির রচিত বইগুলোর বেশিরভাগই ফরাসি ভাষায় লেখা, তবে ইংরেজিতেও তাঁর রচনা আছে। প্রখ্যাত এই লেখক, গবেষক ও চিকিৎসক ১৯৯৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি পরলোকগমন করেন।


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন →
বই সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাসা বা মতামত থাকলে আমাদেরকে জানান
শেয়ার করুন

লেখকের অন্য বইসমূহ

প্রকাশকের অন্য বইসমূহ