ফ্ল্যাপে লিখা কথা
সারেং বৌ উপন্যাসে নাবিক জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা বর্ণিত হয়েছে এবং সেই সূত্রে দেশবিদেশের নানা নগর-বন্দর ,অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশের নানা হিসেবে কথা বলা হয়েছে। তবে এর মূল সারেং বৌ নবিতুনের জীবন সংগ্রামে-যে সংগ্রাম পরিচালিত হয়েছে গ্রামের এক শ্রেণীর সুবিধাভোগী মানুষের নারী -লোলুপতার প্রতিরোধে, তাদের ষড়যন্ত্রের ফলে সৃষ্ট আর্থিক দৈন্যের বিরুদ্ধে , অসহায় প্রোষীতভর্তৃকার কা তার স্বামীর কল্পিত অবিশ্বস্ততার রটনার প্রত্যাখ্যানে। নবিতুন বাংলা সাহিত্যের আরেকজন সতীসাধ্বী নয়, নিজের অস্তিত্ব ও সম্মানরক্ষায় প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে নিরতন্তর যুদ্ধরত নারী, পরিণামে তার মুখে সদ্যজাগা পলির স্নিগ্ধতা, বিজয়ীনির গৌরব।
-আনিসুজ্জামান।
ভূমিকা
পূর্ব বাংলার লেখকের বই কেউ পড়ে না, সবাই চায় কলকাতার বই। লেখক ও প্রকাশকদের এ অভিযোগ আগেও শুনেছি, এখনও শুনি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস এমন অভিযোগের দিন ফুরিয়ে এসেছে। জীবনের যে অন্তর্নিহিত তাগিদ ,স্থবিরতা এবং অবক্ষয়ের বাঁধ ভেঙ্গে সৃষ্টির উৎসকে উন্মুক্ত করে, সে তাগিদ তো আমরা চারপাশেই দেখতে পাচ্ছি, অনুভব করছি। দেশময় আজ সৃষ্টি এবং ভাঙ্গনের দ্বৈত চিত্র সঙ্গীত, জনজীবনের সর্বস্তরে আজ জিজ্ঞাসার কোলাহল। এই দ্বৈত চিত্র শিল্পী-সাহিত্যিকদের মহৎ উপাদান, এ কোলাহল সৃষ্টিরই আহ্বান। আমি তাই আশাবাদীদের একজন।
–শহীদুল্লাহ কায়সার
১৪ শ্রাবণ, ১৩৭৫
ঢাকা