তুষারধারা থেকে প্রকাশিত ‘এক জীবনের গল্প’ উপন্যাসের নায়ক জীবন; যে চরিত্রটি লেখকের এক অনবদ্য সৃষ্টি। জীবনের ফুফাত বোন আলো ভালোবাসে জীবনকে। কিন্তু জীবন ভালোবাসে আলোর বান্ধবী অপূর্বাকে। অপূর্বাও জীবনের প্রতি তার ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। জীবন অপূর্বাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে থাকে। উপন্যাসের মূল নায়িকা অপূর্বার সাথে আবার সম্পর্ক গড়ে ওঠে রোকনেরও। বিষয়টি জানার পর জীবন হয়ে পড়ে হতাশাগ্রস্থ। হতশার ঢেউয়ে এক সময় সে হারিয়ে ফেলতে থাকে নিজের ওপর তার নিয়ন্ত্রণ সীমা। কিন্তু ভুলতে পারে না অপূর্বাকে। এদিকে টিউশনির সুবাদে জীবনের ছাত্র আশিকের কাজিন অপরূপা ভালোবাসে জীবনকে। জীবনও কিছুটা জড়িয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত জীবন কি ভুলে যায় অপরূপাকে? না কি এখানেই শুরু হয় নতুন অধ্যায়ের? সময় গড়িয়ে যায়। এক সময় ভালোবাসার আবেগী ঢেউয়ে হারিয়ে যায় অপূর্বা আর রোকন। অপূর্বা হয়ে পড়ে সন্তান সম্ভবা। তাহলে কি অপূর্বা আর রোকনের বিয়ে হয়েছে? না, তা তো নয়। তাহলে কী? কিন্তু জীবন ভুলতে পারে না অপূর্বাকে। কি হয় তাহলে জীবনের জীবনে? সময়ের ব্যবধানে অপূর্বাকে দেখা যায় পৃথিবীর আকাশ-বাতাস ভারী করে চিৎকার করা কান্নায় ভেঙে পড়তে। কার জন্য অপূর্বার এই বুকফাটা কান্না? রোকনের জন্য না কি জীবনের? জীবনের ফুফাত বোন আলো যে জীবনকে ভালোবেসেছিলে নীরবে; কি হয় তার? অপূর্বা আর আলো ছাড়াও যে অপরূপা ভালোবেসেছিলে জীবনকে তারই বা কি হয়? সে তো অন্য কারো সাথেই ঘর করাটাই স্বাভাবিক; তা-ই কি হয়? কার লাশের পাশে দাঁড়ান অবস্থায় অপরূপা হাতের সোনার রুলি দুটি খুলে ফেলে যে রুলি দুটি ফ্লোরে পড়ে ঢংঢং শব্দে গড়িয়ে যায় দূরে? এমনি এক টানটান কাহিনি নিয়ে এগিয়ে চলে একজন জীবনের গল্প ‘এক জীবনের গল্প’ উপন্যাসটি। শব্দের চমৎকার গাঁথুনিতে সৃষ্টি লেখক আমিনুল ইসলাম মামুন-এর এই উপন্যাসটি পাঠকের হৃদয় ছুঁয়ে যাবে বলেই বিশ্বাস করি।