স্টিভ জবসের (ফেব্রুয়ারি ২৪, ১৯৫৫-অক্টোবর ৫, ২০১১) আয়ুষ্কাল মাত্র ৫৬ বছরের। অসম্ভব সৃষ্টিশীল এই মানুষটির প্রাতিষ্ঠানিক প্রযুক্তিগত বিদ্যা খুব বেশি নয়। কৈশোর থেকেই ক্ষ্যাপাটে, স্বপ্নদ্রষ্টা এবং লক্ষ্যের দিকে একাগ্র। এর ফলে পৃথিবীবাসী পেয়েছে এক বিস্ময়কর প্রযুক্তির জগৎ। তিনি বিপ্লবিক পরিবর্তন এনেছেন পিসি, ট্যাবলেট পিসি, অ্যানিমেশন, গান শোনার যন্ত্র, মোবাইল ফোন, খুচরা বিপণিকেন্দ্র ও ডিজিটাল পাবলিশিংয়ে। অনেকে তাকে তুলনা করেন টমাস আলভা এডিসনের সঙ্গে। কেউ কেউ তার মধ্যে খোঁজেন হেনরি ফোর্ড, ওয়াল্ট ডিজনির ছায়া। কারও কারও মতে, প্রযুক্তিপণ্য ও ব্যবসায় স্টিভ জবসের অবদান এদের চেয়েও বেশি। তার সিক্রেট ফর্মুলা কী? কোন কৌশলে তিনি মাত করলেন পুরো বিশ্ব? কীভাবে পরিত্যক্ত গ্যারেজে প্রতিষ্ঠিত ‘অ্যাপল’ আজ বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানি? সেসব নিয়েই লিখেছেন স্টিভ জবসের জীবনীকার ওয়াল্টার আইজ্যাকসন। এতে এমন কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন, যা নেই আইকন স্টিভ জবস বইটিতেও। স্টিভ জবসের এমনসব তথ্যই সন্নিবেশিত হয়েছে ‘বণিক বার্তা’ কতৃক প্রকাশিত এই বইয়ে।
ওয়ারেন এডওয়ার্ড বাফেট, জন্ম ৩০ আগস্ট ১৯৩০, বাবা পুঁজি বাজারের ব্রোকার এবং পরবর্তীতে কংগ্রেস সদস্য। তিন সন্তানে মধ্যে দ্বিতীয় এবং একমাত্র ছেলে। পড়াশোনা করেছেন ইউনিভার্সিটি অব নেব্রাস্কা এবং কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে।
খুব ছোট বয়সেই বিনিয়োগের প্রতি ঝোঁকেন। সংবাদপত্রের হকারের কাজ করে কিছু টাকা জমিয়ে একটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কিনেন। তখন তার বয়স মাত্র ১১ বছর। তার থেকে কিছু লাভও হয় তার। আর মাত্র ১৪ বছর বয়সেই তিনি বনে যান একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। এভাবে তিনি ধীরে ধীরে পরিণত হোন একজন সফল বিনিয়োগকারীতে এবং নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন পৃথিবীর শীর্ষ ধনীর তালিকায়।
ছোটকাল থেকে বিনিয়োগের প্রতি তার আগ্রহ এবং প্রজ্ঞা জীবনভর দেখিয়ে গেছেন। গত অনেক বছর ধরেই পৃথিবীর শীর্ষ ধনীদের একজন। এতো বিত্তের মালিক হওয়া সত্ত্বেও এখনো বাস করেন একটি তিন রুমের বাড়িতে, যে বাড়িটি ঘিরে রাখার জন্য সীমানা প্রাচীর পর্যন্ত নেই। নিজের গাড়ি নিজেই চালান। নেই ব্যক্তিগত কোন সহকারি। অথচ এ পর্যন্ত বিভিন্ন ধাতব্য প্রতিষ্ঠানে দান করেছেন ৩ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ।
তাকে বলা হয় ওমাহার যাদুকর। ব্যবসায় তার প্রজ্ঞা অতুলনীয়। তিনি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিস্ময়কররকম বিচক্ষণ। এমনসব গুণ তাকে পৃথিবীজুড়া খ্যাতি এনে দিয়েছে। আর সঙ্গে প্রশ্নও জাগে কী এমন আছে তার ভেতর, যার স্ফূরণে মুগ্ধ পৃথিবীর বড় বড় সব প্রতিষ্ঠানের সিইওরা। কী এমন আছে যে, তার বক্তৃতা শুনার জন্য পৃথিবীর বড় বড় ব্যবসায়ীক এক্সিকিউটিবরা মুখিয়ে থাকেন। তার সেসব গুণ, যাদুকরী ক্ষমতা এবং প্রজ্ঞার বিবরণ এই বই।
ইউরোপে শিল্পবিপ্লব শুরু হয় অষ্টাদশ শতাব্দীতে। ব্রিটেনের সামন্ততান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা ভেঙে জন্ম নেয় শক্তিশালী মধ্যবিত্ত শ্রেণী। পরবর্তীকালে এ শ্রেণীর হাতেই ছিল ইউরোপের শিল্প ও প্রযুক্তির মশাল। ব্যবসা-বাণিজ্যের আধুনিকায়নেও সদ্য বিকশিত মধ্যবিত্তের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। সময়ের বিবর্তনে এদের কেউ কেউ রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। সদস্য হন ব্রিটিশ পার্লামেন্টের। পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ ছিল অভিজাত লর্ডদের জন্য নির্দিষ্ট। এরা বসতেন নিুকক্ষ হাউস অব কমন্সে। সদ্য ধনী এ ব্যক্তিদের অনেকে ছিলেন বয়সে তরুণ। অধিকাংশের ছিল না বলার মতো শিক্ষাগত যোগ্যতা। রক্ষণশীল ও অভিজাত ইংরেজ রাজনীতিকরা তাদের দেখতেন অবজ্ঞার চোখে। তাদের বসতে দেয়া হতো হাউস অব কমন্সের পেছনের বেঞ্চে। এরাই ব্যাকবেঞ্চার।
সফল ব্যাকবেঞ্চারদের দেখা পাওয়া যায় এখনো। বর্তমান সময়েও অনেক শীর্ষ ধনী কিংবা নামিদামি প্রতিষ্ঠানের পদস্থ কর্মকর্তা অথচ চৌকাঠ পেরোননি বড় কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। হয়তো মনও বসেনি প্রথাগত পাঠে তবুও সৃজনশীলতা ঢেলে হয়েছেন দুনিয়াজোড়া খ্যাতিমান তেমন মানুষের দেখাও মেলে। মজার ব্যাপার হলো, পড়াশোনায় মন না বসলেও এদের কেউ-ই প্রচলিত শিক্ষার গুরুত্ব অস্বীকার করেননি। বরং অনেকের হাতেই গড়ে উঠেছে বিখ্যাত কিছু গবেষণা প্রতিষ্ঠান। এমন সফল ব্যাকবেঞ্চারদের নিয়েই এ আয়োজন।