বাংলাদেশের বেদে সম্প্রদায়ের উৎপত্তি সম্পর্কে বেদে বিষযক গবেষকগণ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত টানতে পারেননি,এমনকি ঐক্যমত্য হতে পারেননি।কেউ বলেছেন-বেদেরা আরাকানের মনতং-মান্তা নৃগোত্র থেকে এসেছে।কেউ বলেছেন-না,খ্রিষ্টীয় সাত শতকের শেষ দিকে এরা আরবের আলবাদিয়া নামক স্থান থেকে এদেশে এসেছে।কেউ বলেছেন-খ্রিস্টীয় এগার শতকে ইরানে এদের উপস্থিতি ছিল।আবার কেউ কেউ বলেছে-না এরা মূলত খ্রিস্টীয় প্রথম শতকের মাঝামাঝি পূর্বভারত থেকে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।
তবে,নৃবিজ্ঞানিরা একেবারেই একমত যে-বাংলাদেশের বেদেদের মধ্যে আরবদের সেমিটিক কোনো লক্ষণ নেই।কাজেই আমরা বেদে জনগো্ষ্ঠীর নৃতাত্ত্বিক পরিচয়টি জানতে সম্পূর্ণ করেছি ‘বাংলাদেশের বেদে জনগোষ্ঠী’ নামের এই বইটি।বেদেদের সমাজ-সংস্কৃতি ও নৃতাত্ত্বিক পরিচয়,ভাষার উৎস ও তাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য এবং বাংলা সাহিত্যে তাদের অবস্থান নিয়ে রচিত এই বইটি মূলত একটি অখণ্ড সংস্করণ ।এখানে আমরা বলার চেষ্টা করেছি যে-এদেশে বেদে বা ব্যালগ্রাহী বলে যারা পরিচিত তারা পারস্য বা আরব থেকে আসা কেউ নয়।এরা এদেশেরই ভূমিজ।বহু খ্রিস্ট পূর্বাব্দ থেকে এরা এদেশে সর্পজীবি হিসেবেই ছিল এবং আছে।বহু পূর্বাব্দের ঐতিহাসিক দলিল পূরাণগ্রন্থে তার প্রমাণ সুস্পষ্ট।