স্বল্প শোকে কাতর, অধীর শোকে পাথর। অথচ স্বল্প হোক অধীর হোক সব শোককে জয় করেছে সাবিনার সৃষ্টিশীলতা। যে মাতৃজননীর উৎসে তাঁর এই মানবজন্ম, তাকে মাটির কাছে ফিরিয়ে দিয়ে এই কবি জাগ্রত করেছেন তাঁর অনন্তজয়ী সৃষ্টিশীলতাকে; আর তাকেই শক্তির আধার করে ধরে রেখেছেন জননীর অনশ্বর সত্তা। এই ধরে রাখার অশেষ অবলম্বন শৈল্পিক নৈর্ব্যক্তিকতা আর নান্দনিক নির্বাণ। শোককে সৃষ্টিশক্তিতে রূপান্তরিত করে বাংলাভাষার শব্দ-চিত্র-ধ্বনি ও ধারণ-ক্ষমতাকে পুঁজি করে কবি তাঁর গতায়ু জননীসত্তাকে নির্মাণ করেছেন চিরায়ু অবিনশ্বরতায়। অপ্রতিদ্বন্দ্বী সাবিনার এই পঙক্তিসুন্দরতা, যা কথনবয়ানের অপূর্বতায় রচনা করেছে শিল্পের এক অনাস্বাদিতপূর্ব নন্দনজগত। এমন ভারসাম্যময় সুমিত কাব্যোচ্চারণ আসলেই বিরল। ব্যক্তিশোককে জয় করে এমন এক সমগ্রসুন্দরের সৃষ্টি এক কথায় মহত্ব-চিহ্নিত কাব্যকীর্তি। এই পঙক্তিমালায় কালজয়ী হয়ে আছেন জননী ও তাঁর কবিদুহিতা। বাংলা কবিতায় এ এক বিরল কীর্তি। শ্রদ্ধা জননীর প্রতি। অভিনন্দন নন্দনবন্ধনে প্রমুক্ত সাবিনার কবিসত্তার প্রতি। [মুহম্মদ নূরুল হুদা] ১৪ জানুয়ারি ২০২১ জাতিসত্তার কবি