“সুন্দরী কমলা ” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা
দিনটার কথা আমার খুব মনে আছে। সকাল থেকে একটানা বৃষ্টি হচ্ছিল সেদিন। শুক্রবার। কলেজ বন্ধ ছিল। হােস্টেলে নিজের রুমে সারাদিন ঘুমিয়ে কাটিয়েছি আমি। বিকেলবেলা বৃষ্টিটা একটু কমেছে দেখে পাজামা আর ফুলহাতা নীল শার্ট পরে বেরিয়েছি। কোথায় যাব কোথায় যাব করে চলে গেছি আলমদের বাড়ি। বাড়ির কাছাকাছি গিয়ে শুনি আলম যেই ঘরটায় থাকে সেখানে হারমােনিয়াম বাজছে। কিন্তু হারমােনিয়ামের সঙ্গে গলা মিলাচ্ছে না কেউ। শুধু কী একটা সুর তােলার চেষ্টা। ভাবলাম চেষ্টাটা বােধহয় আলমই করছে। কারণ এই বাড়িতে গান বাজনার একটা রেওয়াজ আছে। তরী গান গায়। আলমের মাও নাকি চমৎকার গাইতেন এক সময়। তবে আলম গান গায় কিংবা হারমােনিয়াম বাজাতে পারে এটা আমার জানা ছিল। আলম কী কথাটা আমার কাছে লুকিয়ে গেছে। আজ হাতে নাতে ধরব আলমকে। পা টিপে টিপে আমি গিয়ে আলমের ঘরের সামনে দাঁড়াই। তারপর পর্দা মাত্র সরিয়েছি তখুনি ভেতর থেকে মেয়েলি গলা গেয়ে উঠল ‘ঘরেতে ভ্রমর এলাে গুনগুনিয়ে। শুধু এই একটা লাইন। তারপর তরীর সঙ্গে আমার চোখাচোখি হয়ে গেল। দুজনেই লজ্জা পেয়েছিলাম। আমাকে দেখেই গান থামিয়ে মাথা নিচু করেছিল তরী। পারলে দৌড়ে পালিয়ে আসতাম আমি। কিন্তু তরী আমাকে দেখে ফেলেছে। এখন আর পালাবার উপায় নেই।