কুরআন হাদিসের আলোকে ইসলামী বিবাহ

৳ 140.00

লেখক حكيم الامت مولانا اشرف علي تهانوي رح ( হাকীমুল উম্মত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহ.)
প্রকাশক নাদিয়াতুল কুরআন প্রকাশনী
ভাষা বাংলা
পৃষ্ঠার সংখ্যা ২২৪
সংস্কার 1st Published, 2008
দেশ বাংলাদেশ

ভূমিকা
বিবাহ সম্পর্কে অবগত নয় এমন মানুষ দুনিয়াতে বোধ হয় খুব কমই আছে। মুসলমান-অমুসলমান এবং নারী পুরুষ নির্বিশেষ প্রায় সকলের জীবনেই একদিন বিবাহের আবির্ভাব ঘটে। বিবাহের মাধ্যমেই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এই পৃথিবকে আবাদ রাখবেন। আর ইসলামী শরীআতে তো বিবাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও বটে। কিন্তু ইবাদতের সেই পদ্ধতিটি আজ এতই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, ধনী-গরীব, ধার্মিক অধার্মিক প্রায় সকলেই এ বিষয়ে বিপদগ্রস্থ। জীবনের এমন একটি মধুর বিষয় আজ মানুষের নিকট সর্বাধিক দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছেলে মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে যাওয়ার পরেও বিভিন্ন সামাজিকতা আর লৌকিকতা পালন করতে যেয়ে সময়মত তাদের বিবাহ দেয়া যাচ্ছে না। এতে সমাজ কলুষিত হচ্ছে। যিনা ব্যভিচার মহামারীর আকারে বিস্তার লাভ করছে।

অথচ ইসলাম বিবাহ শাদীকে সহজতম একটি বিষয় হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। রাসুলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহবায়ে কেরাম নিজেদের জীবনে এটি অত্যন্ত সহজভাবে প্রতিষ্ঠিত করে দেখিয়ে দিয়ে গেছেন। যে বিবাহ ছিল জীবনের অন্যতম একটি আনন্দময় ঘটনা সেই বিবাহই আজ চরম নিরানন্দ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। পরিণতিতে স্বপ্নীল জীবনের প্রথম পর্বেই কত শত যুবক যুবতী হতাশাগ্রস্ত হয়ে বর্ণময় এই পৃথিবীকে বিদায় জানাচ্ছে। কন্যা সন্তানের জন্ম হলে কত পিতা মাতা ক্ষোভে দুঃখে তাদেরকে গলা টিপে হত্যা করছে । আবারও ফিরে গেছে এই সমাজ জাহেলিয়াতের অন্ধকার যুগে। বস্তুতঃ সুন্নতে নববী এবং ইসলামী বিধান পরিত্যাগ করে মনমত চললে তার পরিণতি এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক। কন্যার বিবাহ উপলক্ষে যৌতুকের নামে লুণ্ঠন আর বরযাত্রীর নামে ডাকাতির খানার যে প্রচলন আমাদের সমাজে হয়েছে তাতে এই বিপুল ব্যয়ভার বহন করা অনেকের পক্ষেই অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এই বিপদ থেকে বাঁচতে হলে নবীজির আদর্শ বুকে ধারণ করা ছাড়া বিকল্প আর কোন পথ নেই।

বিবাহ কিভাবে ইসলামী পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা যায় সে সম্পর্কে উলামায়ে কেরাম ছোট বড় বিভিন্ন আকারের কিতাব রচনা করেছেন। হাকীমুল উম্মত, মুজাদ্দিদুল মিল্লাত, হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানবী (রহ:) তা বিভিন্ন লেখনী ও মাওয়ায়েযের মধ্যে এসম্পর্কে বিশদ আলোকপাত করে জাতিকে সঠিক দিক নির্দেশনা দিয়েছেন এবং এটিকে কেন্দ্র করে সমাজে যেসব রুসুমাত কুপ্রথা আর বিজাতীয় প্রথা চালু রয়েছে সেগুলির মূলোৎপাটন করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এসব বিষয়গুলি বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকার কারণে তা থেকে উপকৃত হওয়া কিছুটা মুশকিল হয়ে পড়েছিল। আল্লাহ পাকের মেহেরবাণী যে, মাওলানা যায়েদ মাযাহেরী সাহেব অক্লান্ত পরিশ্রম করে সেসব বিষয়গুলিকে একত্রিত করে গুরুত্বপূর্ণ একটি সংকলন তৈরী করেছেন, যা এ বিষয়ের একটি মাইলফলক।

বইটির বাংলা অনুবাদ আমরা পাঠকের হাতে তুলে দেয়ার প্রয়াস চালিয়েছি। আশা করি বইটি যথাযথ ভাবে অনুসরণ করে আমরা যদি আমাদের বিবাহশাদী সম্পন্ন করি তাহলে এটি ইবাদতের সাথে সাথে সুখী জীবন গঠনের জন্য উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। আল্লাহ তাআলা এই সংকলনটি কবুল করুন এবং লেখক, সংকলন ও অনুবাদকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে জাযায়ে খায়ের দান করুন এবং উম্মতের ইসলাহ ও সংশোধনের মাধ্যম বানিয়ে দিন। আমীন!
মীযানুর রহমান কাসেমী

সূচিপত্র
* বিবাহ
* কুফু বা সমতা
* মহরের বর্ণনা
* যৌতুক
* রুসূম ও কু প্রথা
* বাসর রাতে কি করণীয়
* শরীয়তের দৃষ্টিতে একাধিক বিয়ে
* পর্দার শরঈ বিধান
* স্বামী স্ত্রী মিলন বিধান
* গোসলের বর্ণনা
* তালাকের বর্ণনা

হাকীমুল উম্মত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী, ভারতীয় উপমহাদেশ এবং এর গন্ডি পেরিয়ে যিনি হাজারো মানুষকে দিয়েছেন আত্মশুদ্ধি ও তাসাওউফ এর শিক্ষা। যার কারণে তাঁর উপাধি ছিলো ‘হাকীমুল উম্মাত’ বা উম্মাহর আত্মিক চিকিৎসক। উপমহাদেশে মুসলমানদের মাঝে সুন্নতের জ্ঞান প্রচারে তাঁর প্রতিষ্ঠিত সংস্থা ‘দাওয়াতুল হক’ এর অবদানের জন্যও প্রসিদ্ধ মাওলানা আশরাফ আলী থানভীর নাম। মাওলানা আশরাফ আলী থানভী ১৯ আগস্ট, ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে (রবিউস সানী ৫, ১২৮০ হিজরী) ভারতের উত্তর প্রদেশের থানাভবনে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবেই হাফেয হোসাইন আলী রাহ.-এর কাছে সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্থ করার মধ্য দিয়ে শুরু হয় তাঁর শিক্ষাজীবন। নিজগ্রামেই ছোটবেলায় হযরত মাওলানা ফতেহ মুহাম্মদ থানভী রাহ.-এর কাছ থেকে আরবি ও ফার্সি ভাষার প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। ১২৯৫ হিজরীতে তিনি দারূল উলুম দেওবন্দে ভর্তি হন ইসলামি জ্ঞান-বিজ্ঞানের উচ্চতর শাখাগুলোয় বিচরণ করার আগ্রহে। সেখানে তিনি পাঁচ বছর হাদীস, তাফসীর, আরবি সাহিত্য, ইসলামী দর্শন, যুক্তিবিজ্ঞান, ইসলামি আইন এবং ইতিহাস বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। দেওবন্দে শিক্ষার অধ্যায় সমাপ্ত করে মক্কা মুকাররমায় মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ্‌ মুহাজিরে মক্কীর কাছে কেরাত ও তাজবীদ শেখেন। তিনি কানপুরের একটি মাদ্রাসায় মাত্র ২৫ টাকা বেতনে শিক্ষকের পদ দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে কানপুরের টপকাপুরে জামিউল উলূম মাদ্রাসার প্রধান পরিচালকের আসন অলংকৃত করেন এবং দীর্ঘ ১৪ বছর সেখানে শিক্ষকতা করেন। পরবর্তীতে তাঁর শিক্ষক হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কীর রহ. পরামর্শে তিনি থানা ভবনের খানকাহে ইমদাদিয়ায় অবস্থান গ্রহণ করেন এবং জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। সারা জীবনে আশরাফ আলী থানভী এর সকল বই এর হিসেব করতে গেলে ছোট-বড় মিলিয়ে তা সাড়ে বারো হাজার ছাড়িয়ে যায়। হাকীমুল উম্মত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহ. এর বই সমূহ এর মধ্যে ফিকাহ বিষয়ক বই ‘বেহেশতী জেওর’ উপমহাদেশের মুসলমানদের মাঝে বহুল পঠিত। এছাড়া তাঁর রচিত কুরআন শরীফের উর্দু তরজমার গ্রন্থ বয়ানুল কুরআনও (কুরআনের ব্যাখ্যা) এর ভাষা ও ব্যখ্যাশৈলীর জন্য প্রসিদ্ধ। হাকীমুল উম্মত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহ. এর বই সমগ্র এর স্বত্ত্ব তিনি জাতির কল্যাণে উন্মুক্ত করে রেখে গেছেন। জুলাই ১৯, ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে (১৬ রজব, ১৩৬২ হিজরী) আল্লামা থানভী রহ.

তাঁর জন্মস্থান থানা ভবনেই মৃত্যুবরণ করেন।


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন →
বই সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাসা বা মতামত থাকলে আমাদেরকে জানান
শেয়ার করুন

লেখকের অন্য বইসমূহ

প্রকাশকের অন্য বইসমূহ