একটা প্রশ্ন বটে, ‘এলোকেশী কে?’ আমদের চেনা-জানা নগর ও নিসর্গ-পরিবেষ্টিত জীবন-পরিপার্শ্বেরই একটি চরিত্র, নাকি কবিমনের খুব গভীরে সৃষ্টি হওয়া বিচূর্ণিত ও বিচিত্র অনুভূতির মানবিক ও নান্দনিক আয়োজন? কখনো মনে হয় কবিসত্তার সঙ্গে অঙ্গীকৃত এক আলোড়ন, কখনো মনে হয়, না, তা তো নয়, নক্ষত্রের মতো দূরবর্তী ও, যার আলো এসে আছড়ে পড়ে আমাদের নীলাভ এই পৃথিবীতে, তা যদি না-ও হয়, অন্তত কবিচিত্তে। মর্তমানবী হয়েও এলোকেশী নক্ষত্র-মানবী, কিংবা নক্ষত্র-মানবী হয়েও ও এই পৃথিবীর প্রাত্যহিকতায় আত্তীকৃত। তাই চেনা-জানার মধ্যেও ফাঁক থেকে যায়, না-চেনা-জানার মধ্যেও সত্যতা থাকে না। এলোকেশী হয়ে ওঠে মাধুর্যময় রহস্য। কখনোবা বেদনা-সঞ্চারী যুগসত্তা।
ছোট ছোট এ কবিতা স্বতন্ত্রভাবে আমাদেও চিত্তকে আপ্লুত করে, আর তাদের সমবায় আমাদের সম্মোহিত ও সমাচ্ছন্ন করে রাখে। খালেদ হোসাইনের ‘এলোকেশী’ প্রেমের কবিতাই। কিন্তু কেবল প্রেমের কবিতাই নয়। কারণ চিরন্তন মানবিক আবেগের ফাঁক ফোকর গলিয়ে এখানে উঁকি দেয় সমকালীন জীবনের করাল বাস্তবতা।
কবি লিখেছেন, ‘অনেকেই জানতে চায় এলোকেশী কে? আমিও জানতে চাই এলোকেশীকে।’ কবির জানা যেখানে অনিঃশেষ, কাব্য-পাঠকের যাত্রা সেখান থেকেই শুরু হোক। এ যাত্রা জীবনমুখি, সুতরাং আনন্দময় হয়ে উঠবেÑএ কথা বলাই যায়।