আমার প্রবন্ধসমগ্রের প্রথম খণ্ডে সঙ্কলিত প্রবন্ধগলি কালানুক্রমে সাজানাে হয়েছিল। দ্বিতীয় খণ্ডে সেই রীতি অনুসরণ করা হয়নি। এবার সাজানাে হয়েছে বিষয় অনুসারে। এটা সম্পাদকের ও প্রকাশকের ইচ্ছায়। এতে পাঠকেরও সুবিধা। তাঁকে একই বিষয়ের উপর লেখার জন্যে পরবতী খণ্ডের অপেক্ষায় থাকতে হয় না। কিন্তু গবেষকের অসুবিধা। তিনি লেখকের মানসিক বিবর্তনের খেই হারিয়ে ফেলেন। ধরুন, পঞ্চাশ বছর বয়সের লেখার পর আসছে পচাত্তর বছর বয়সের লেখা। মানুষের মন তাে এক লাফে পচিশ বছর ডিঙিয়ে যেতে পারে না। মাঝখানের পচিশটা বছর তাে বিবর্তন থেমে থাকেনি। একই সময়ে লেখক একাধিক বিষয়ে পড়ে, শােনে, দেখে, শেখে, লেখে। একটি বিষয়ে লিখলেও তার উপরে বয়সের ছাপ পড়ে। কালানুক্রমিক সঙ্কলনে ধারাবাহিক বিবর্তনের সন্ধান মেলে। প্রবন্ধ লেখা বিষয়নিরপেক্ষ একটি আট। এই প্রসঙ্গে আমি আমার আট বছর আগে প্রকাশিত শ্রেষ্ঠ প্রবন্ধ’ সঙ্কলনের ভূমিকার বক্তব্য পুনরাবত্তি করছি। “প্রবন্ধ লেখার আট আমি ‘সবুজপত্র’-সম্পাদক প্রমথ চৌধুরী মহাশয়ের কাছে শিখি। বারাে তেরাে বছর বয়সে। তাঁর অজ্ঞাতসারে। পরবতী বয়সে যখন ইংরেজী সাহিত্যের সঙ্গে পরিচিত হই তখন চালস ল্যাব, রবার্ট লুইস স্টীভেনসন, ভার্জিনিয়া উলফ প্রভৃতির প্রবন্ধের আট আমাকে মুগ্ধ করে। ফরাসী সাহিত্যরথী মতেন যে সর্বশ্রেষ্ঠ প্রবন্ধকার এটা ভালাে করে বােঝবার আগেই আমার মতেনের ইংরেজী অনুবাদের সেট চুরি যায়। তাঁর কাছে শিক্ষানবীশী আর হয় না।