“দূরপাল্লায় দুই নারী” বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ
চোখের সামনে সুদীপাকে মরে যেতে দেখেছিল অয়ন। তিন-তিনজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার একমত হতে পারছিলেন না ওর ঠিক কি অসুখ হয়েছে। শেষ পর্যন্ত যখন রােগ ধরা পড়ল তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। সুদীপা চলে যাওয়ার পরে অয়নের মনে। হচ্ছিল পৃথিবীটা ফাঁকা হয়ে গেল। তার আর কোনাে আত্মীয় নেই। সুদীপারও সন্তান হয়নি। এই কোলাহল, মানুষের ভিড় সহ্য হচ্ছিল না পঞ্চাশাের্ধ কমপিউটার ইঞ্জিনিয়ার অয়নের। তার মনে হচ্ছিল যদি কোনাে নির্জন জায়গায় চলে গিয়ে সরল জীবন-যাপন করতে পারত তাহলে সুখ হয়তো পেত না কিন্তু স্বস্তি পেত।
এই সময় ইন্টারনেটে একটি বিজ্ঞাপন দেখে উৎসাহিত হল সে। তারপর একটি নির্জন পাহাড়ী বাংলােতে গিয়ে উঠে পড়ল সে-সামনে নীল সমুদ্রের জলরাশি তাকে কেবলই হাতছানি দেয়। হঠাৎ এই নির্জনতায় ছেদ পড়ে। সাঁইবাবার মন্দির দর্শন করতে এলে সর্বস্ব খুইয়ে ফেলে বৃদ্ধা মা ও তার ত্রিশাের্ধ ডিভাের্সি কন্যা দিতি সেন। অচেনা জায়গায় তাদের ঠাই হয় সেই বাংলােয়- অয়ন নিজেই তাদের নিয়ে আসে। বাংলাের গৎবাঁধা নির্জনতা হঠাৎ মুখর হয়ে ওঠে। দিতি সেন ধীরে ধীরে অয়নের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে। অপর দিকে স্থানীয় ধীবর সম্প্রদায়ের তরুণী বধু মধুবালার অয়নের প্রতি দুর্বলতা যা অয়নের মনােজগতে ক্রিয়া করে।
মানুষ সবকিছু হারিয়ে আসলেই কি নির্জনতা কামনা করে, নাকি মানুষের কলরবই তার মনের গােপন চাহিদা- এই সত্যিটাই উঠে এসেছে এই উপন্যাসে’ কিংবদন্তী ঔপন্যাসিক সমরেশ মজুমদারের নাতিদীর্ঘ এই উপন্যাসটির কাহিনী অভিনব ও বেগবান।