“৭ই মার্চের ভাষণ স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা” বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ
ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ । বাঙালি জাতির জীবনে এ দিনটির গুরুত্ব অপরিসীম। এদিন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ। মুজিবুর রহমান ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে ঘােষণা করেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ বর্ষ পরিক্রমায় সেদিনটি আবার ফিরে এসেছে আমাদের জাতীয় জীবনে । আমাদের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত । একাত্তরের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে এ দেশের মানুষ দলমত-ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে স্বাধীনতার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। সেদিন ঐক্য ও জাতীয়তাবাদ ছিল বাঙালি জাতির এগিয়ে যাওয়ার মূল প্রেরণা। ৭ই মার্চের ভাষণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান শুধু যে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন তাই নয়, তিনি বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত করেছিলেন। বস্তুত ২৬শে মার্চ থেকে বাংলাদেশে যে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয়েছিল দখলদার পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে, সেই রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি ছিল বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ।
মাত্র ১৮-১৯ মিনিটের এ ভাষণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে তুলে আনেন অবিশ্বাস্য এক উচ্চতায়। এতে সামরিক আইন প্রত্যাহার, সেনাবাহিনীর ব্যারাকে প্রত্যাবর্তন, শহীদদের জন্য ক্ষতিপূরণ ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর সংবলিত চার দফা দাবিও উত্থাপন করেন তিনি। এ জনসভায় মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশের নেতত্বে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মােনাজাত করা হয়। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঘােষণার পর সারা জাতি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে প্রস্তুত হয়। শুরু হয় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। এ যুদ্ধের মূলে প্রেরণা ছিল ৭ই মার্চ। বস্তুত বাঙালি জাতির স্বাধীনতাযুদ্ধের ভিত্তি রচিত হয়েছিল ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ।