“আমার বাংলাদেশ আধুনিক যুগ” বইয়ের ফ্ল্যাপে লেখা:
হাজার বছরের বাংলাদেশ ছিল সুখসম্পদে পূর্ণ। বাংলাদেশের উর্বর মাটি ছিল সােনাফলা। আর এদেশের মানুষও ছিলেন মেধাবী ও পরিশ্রমী। তারা সমাজ, শিল্পকলা, শিক্ষা, বিজ্ঞান সকল ক্ষেত্রে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। চমৎকার করে তারা সাজিয়েছিলেন এই দেশটিকে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, পূর্বপুরুষদের এতসব গৌরবের কথা জানার মতাে বইয়ের অভাব রয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাস যেটুকু সহজে জানা যায় তা প্রধানত রাজা, সুলতান আর সম্রাটদের কথা। সাধারণ মানুষের জীবন, শিল্পসংস্কৃতি এসব খুব সহজে জানা যায় না। দেশকে জানার এই শূন্যতা পূরণের জন্যই তিন পর্বে ‘আমার বাংলাদেশ’ নামে তিনটি বই সাজানাে হয়েছে। বাংলার ইতিহাসে আধুনিক পর্বের সূচনা আঠারাে শতকের মধ্যভাগ থেকে। তখন মুসলমান শাসনের অবসান ঘটিয়ে বাংলায় প্রতিষ্ঠিত হয় ইংরেজশাসন। এভাবেই আধুনিক যুগে প্রবেশ করে বাংলা। পলাশির যুদ্ধ, নবাব সিরাজ উদদৌলার পরাজয়-এভাবেই ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন শুরু হয়। একশ বছর পরে অবসান হয় কোম্পানির শাসনের। শুরু হয় একশ বছরের ব্রিটিশ শাসন। এরপর বাংলার রাজনীতির ক্ষেত্রে নানা পালাবদল ঘটে। একসময় ভারত ছেড়ে যেতে বাধ্য হয় ইংরেজ শাসকরা। জন্ম হয় ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটো স্বাধীন রাষ্ট্রের। পাকিস্তান রাষ্ট্রের পশ্চিমপাকিস্তানি শাসকরা পূর্বপাকিস্তানের মানুষ অর্থাৎ আজকের বাংলাদেশের মানুষের প্রতি ন্যায্য আচরণ করেনি। তারা এদেশের সম্পদ পাচার করে নিয়ে গেছে পশ্চিমপাকিস্তানে। শিক্ষাসংস্কৃতিসহ সকল ক্ষেত্রে তারা পিছিয়ে রাখতে চেয়েছে বাংলাদেশের মানুষকে। এদেশের মানুষও প্রতিবাদ করতে থাকে। আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। বাঙালিকে দমন করার জন্য শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানি সৈন্যরা অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। শুরু করে গণহত্যা। বাংলাদেশের মানুষও রুখে দাঁড়ায়। এভাবেই শুরু হয়ে যায় মুক্তিযুদ্ধ। নয়মাস যুদ্ধ করে বাঙালি ছিনিয়ে আনে বিজয়। এই বইটিতে বাংলাদেশের আধুনিক পর্বের এসব ইতিহাসই প্রাণবন্ত হয়ে ফুটে উঠেছে।