“লোককলা তত্ত্ব ও মতবাদ” বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ
দেশের অগণিত সাধারণ মানুষ যুগ যুগ ধরে লােককলা (folklore) রূপ-রসসৌন্দর্য উপভােগ এবং নীতি-শিক্ষা-জ্ঞান লাভ করে আসছে। বাঙালি জাতির ও মাতৃভাষার জন্মের পর প্রায় হাজার বছরের সঞ্চিত এ-সম্পদ দীর্ঘকাল উপেক্ষিত ছিল। বিশ শতকের গােড়া থেকে জাতীয়তাবােধ ও দেশপ্রেম জাগ্রত হলে শিক্ষিত সমাজ লােককলার নানা শাখার উপকরণ সংগ্রহ, সংকলন, আলােচনা ও মূল্যায়ন করতে শুরু করে। আমরা এযাবৎ যা-কিছু করেছি, তাতে প্রধানত ব্যক্তির আবেগ-উল্লাস, অভিপ্রায়-অনুরাগ প্রাধান্য পেয়েছে। বৈজ্ঞানিক যুক্তি ও তত্ত্বের স্থান সেখানে খুব কমই আছে। বিশ্বে, বিশেষত পাশ্চাত্য দেশে লােককলার সংগ্রহ, সংরক্ষণ, আলােচনা, গবেষণা ঠিক এর বিপরীত ধারায় পরিচালিত হয়েছে । যেহেতু লােককলা। একটি বহুমুখী বিদ্যাশৃঙ্খলা (multidiscipline) হিসাবে বিবেচিত হয়, সেহেতু পাশ্চাত্য দেশে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে এর বিচারবিশ্লেষণ হয়েছে; তৈরি হয়েছে নানা তত্ত্ব ও মতবাদ। এসব তত্ত্ব ও মতবাদ প্রয়ােগ করে পণ্ডিতগণ লােককলা গবেষণাকে অনেক উপরে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।