”ঢাকা : ইতিহাস ও ঐতিহ্য” বইয়ের প্রথম ফ্ল্যাপ এর লেখা :
দীর্ঘ ঐতিহ্যের পথ ধরে ঢাকা নগরীর পত্তন। ভারত উপমহাদেশে দ্বিতীয় নগরায়নের যুগে গড়ে ওঠা নগরগুলোর ধারাবাহিকতায় একসময় ঢাকা নগরীর যাত্রা শুরু হয়। ঢাকা নগরীর ইতিহাস জুড়ে আছে উজ্জ্বল ঐতিহ্যের মণিকাঞ্চন। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের, প্রয়োজনীয় তথ্য-সূত্রের অভাবে এসব ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অনেকটাই অজানা রয়ে গেছে। অনেকটা পেছনে তাকাতে পারা যায়নি অনেককাল। তাই ঔপনিবেশিক শাসনপর্ব পেরিয়ে সামান্যই পটভূমির খোঁজ পাওয়া যায় প্রকাশিত ঢাকাচর্চা বিষয়ক গ্রন্থগুলোতে। ১৬১০ সালে ঢাকা তথা পূর্ববাংলা সর্বভারতীয় মোগল সাম্রাজ্যের একটি সুবাহ বা প্রদেশে পরিণত হয়। সুবা বাংলার রাজধানী হয় ঢাকা। ইতিহাসচর্চার বৈজ্ঞানিক দিক হলো ইতিহাসের ঘটনা ও ঐতিহ্য উপস্থাপন এবং বিশ্লেষণ করতে হয় প্রাথমিক ও দ্বিতীয় পর্যায়ের সূত্র বিশ্লেষণ করে। এক্ষেত্রে প্রত্নতাত্ত্বিক সূত্র বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। কিন্তু এধারার জ্ঞানচর্চা দীর্ঘদিন না থাকায় ঢাকার ইতিহাসচর্চা আটকে ছিল মোগল যুগ পর্যন্ত কালপরিসরে। তাই আমাদের অনেকেরই মনে হয়েছিল ঢাকা নগরীর পত্তন হয় বাংলায় মোগল সুবার পত্তনের সাথে সাথে। এর আগে হয়তো ঢাকা একটি জনপদ মাত্র ছিল। আর তাই ঢাকা নগরীর ঐতিহাসিকতা আটকে ফেলেছি ৪০০ বছরের মধ্যে। কিন্তু প্রত্নসূত্র ও আনুসাঙ্গিক নানা সূত্র বিশ্লেষণ করে এখন দেখা যাচ্ছে হাজার বছর আগেও ঢাকায় নাগরিক জীবনের স্পন্দন ছিল। প্রকৃত ঢাকাকে যথার্থভাবে উন্মোচন করতে দীর্ঘ গবেষণার প্রয়োজন পরবে। এই গ্রন্থের লেখক সেই গবেষণায় নিজেকে যুক্ত রেখেছেন। ঢাকা নগরীর ঐতিহাসিকতা নিয়ে নানা বিভ্রান্তি থাকায় এ থেকে বেরিয়ে আসার প্রয়োজন ছিল। এ লক্ষ্যে বর্তমান গ্রন্থ সাধারণ কৌতূহলী পাঠকের কাছে সংক্ষেপে ঢাকা নগরীর ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে প্রাথমিক গবেষণার ধারণা থেকে একটি সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনার চেষ্টা করেছেন ।