“আতই চোরার আতান্তর” বইয়ের ফ্ল্যাপের কথা:
গল্পগুলােতে লেখক বিষয়বস্তু, শব্দব্যঞ্জনা ও দৃশ্যপট বর্ণনার সমাহারে নির্মাণ করেন ত্রিমাত্রিক এক আরশি—যাতে প্রতিফলিত হয়, গ্রামীণ বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে ব্যতিক্রমী কতিপয় চরিত্র। প্রারম্ভে পাঠক পরিচিত হন শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিত্তে পরিশীলিত এক বয়ােবৃদ্ধের। সাথে—যিনি জরাজনিত কারণে অনুভব করেন, আত্মপ্রকাশে তার অক্ষমতা। পরবর্তী কয়েকটি গল্পে মুক্তিযুদ্ধের দুর্যোগ-দীর্ণ পরিস্থিতিতে পল্লবিত হয় কিছু মানুষের আতঙ্ক ও সঠিক পথ অনুসন্ধানের প্রচেষ্টা। অন্য দুটি গল্পে প্রাধান্য পায়, একজন তস্করও শিশু লালন পালনের দায়িত্ব নিয়ে শিকড়চ্যুত এক আয়ার অন্তর্গত দ্বন্দ্ব ও দোলাচল। স্বল্প পরিসরে লেখক বয়ান করেন —গৃহহীন এক ফকির গােছের মানুষের সাথে পরিযায়ী পাখির নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠার কাহিনি। দৃষ্টিহীনতায় ভােগা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আমলের এক সাবেক সৈনিকের দিনযাপনের বিবরণ পাঠকের মনে যুগপৎ জন্ম দেয় ঘৃণা ও সহানুভূতির। চলিষ্ণু জীবনের ঘাত-প্রতিঘাতে আত্মবিস্মৃত—এমনকি জন্মভূমির ঠিকানা ভুলে যাওয়া বা মমতাদর্শের সাবেক এক রাজনৈতিক কর্মী বা মানসিকভাবে বিপন্ন প্রাইমারি স্কুলের হেডমাস্টারের ঘটনাও পাঠককে সামগ্রিকভাবে মানবজীবনের পরিণতি সম্পর্কে সচেতন করে তুলে।