“গ্রেট পিরামিড থেকে গ্রেট ওয়াল” বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ
জীবনের লক্ষ্য হওয়া উচিত স্মৃতি নিয়ে মরা, স্বপ্ন নিয়ে নয় । যখন স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবাে, সেটি হবে মধুর স্মৃতি। ভ্রমণ নিছক মধুর স্মৃতি নয়, ভ্রমণ মানুষের ঋদ্ধ করে, সমৃদ্ধ করে, উদার করে- এক কথায় বিশ্বনাগরিক করে তােলে । ভ্রমণে অনেক সমুদ্র সৈকত ঘােরা হয় । সৈকত থেকে ফিরেই জুত থেকে বালু মুছে ফেলি, কিন্তু সে বালু মিশে থাকে আমাদের মননে, আত্মায়, ভ্রমণই হচ্ছে একমাত্র জিনিস আমরা কিনে থাকি যা আমাদের দরিদ্র নয়, আরাে সমৃদ্ধ করে। আমরা ভ্রমণে যেখানেই যাই, তার প্রতিটি বিষয়, অংশ কোনাে না কোনাে ভাবে আমাদের জীবনের অংশ হয়ে যায় । এভাবেই ভ্রমণ জীবনকে প্রসারিত করে । উন্মুক্ত করে, সমৃদ্ধ করে। মনে করার কারণ নেই সব দেশই একই রকম, সব মানুষও। মূলত প্রতিটি ভ্রমণে প্রতিটি স্থানে, মানুষ, বিষয়ই নতুন হয়ে দেখা দেয়, নতুন বােধ-চেতনা ও অভিজ্ঞতা দেয়।
মিসর ও চীন ভ্রমণ নিয়ে অনেকেই লিখেছেন, এসবের ইতিহাসও অনেকের জানা তবে প্রতিটি দিন, প্রতিটি ক্ষণ ভ্রমণে যে আনন্দ, শিহরণ, রােমাঞ্চ অনুভব করেছি এই বইয়ে তার অনুপুঙ্খ বর্ণনা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। প্রায় ৫ হাজার বছরের সুপ্রাচীন সভ্যতার ভিতর নিজেকে স্থাপন করে সেই সময়কার মানুষ, জনপদ, সভ্যতা, সংস্কৃতি, রাজ্যশাসন ও বিস্ময়কর নির্মাণগুলাের মনের চোখে প্রত্যক্ষ করার চেষ্টা করেছি । চীন ও মিসরের দুই প্রধান সভ্যতার ইতিহাসের অলি-গলি ঘুরে, নিজেকে হারিয়ে দিয়েছিলাম সেই আদি সময়ের জনজীবন, রাজজীবনের মধ্যে সেই সুখ-স্মৃতির খণ্ডচিত্র এই বইয়ে লিপিবদ্ধ করার চেষ্টা করেছি। ইতিহাসের মসলাসহ এই ভ্রমণ কাহিনী যারা ঐসব দেশ ঘুরেছেন বা ভবিষ্যতে ঘুরবেন সবার জন্য একটি রােমাঞ্চকর, আনন্দদায়ক ও শিক্ষণীয় পাঠ হবে আশা করা যায় ।