“অ্যা লেটার ফ্রম অ্যা ফাদার টু হিজ ডটার” বইয়ের ভিতরের লেখা:
বেশিরভাগ ছেলেমেয়ে নিজেদের মা-বাবাকে দেবতার মতাে মনে করে। আমার মা বাবা যেমন আমার পরম বন্ধু ছিলেন সে রকম কিন্তু সকলের মা বাবা হন না। সব কিছুতেই আমার বাবার আগ্রহ ছিল। নিজের কৌতুহলকে অপরের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারলে তিনি খুশি হতেন। অনেক রকম প্রশ্ন আমার মনে জাগত। আর এই প্রশ্নগুলাের জন্যেই তিনি আমাকে পৃথিবী সম্পর্কে নানা কথা বলতে পেরেছিলেন—যে সব মানুষ এখানে বাস করত তাদের কথা, তাদের আদর্শ ও কাজকর্ম এবং সাহিত্য ও শিল্পকলার মধ্য দিয়ে কীভাবে তারা অন্যদের মুগ্ধ করেছিল সেই সব কথা। সবচেয়ে বড় কথা হলাে, তিনি আমাদের এই বিস্ময়কর দেশের কথা বলতে এবং লিখতে ভালােবাসতেন—দেশের অতীতকালের কীর্তি ও ঐশ্বর্যের কথা এবং পরে কীভাবে দেশের পতন হলাে এবং দেশ পরাধীন হলাে। একটি চিন্তাই তার মনে সব সময় জেগে থাকত—তা হলাে, স্বাধীনতা। শুধু ভারতের নয়, পৃথিবীর সকল মানুষের জন্যে স্বাধীনতা।
আমার বয়স যখন আট কিংবা নয় তখন এই বইয়ের চিঠিগুলাে লেখা হয়েছিল। পৃথিবীর প্রথম যুগের কথা এবং কীভাবে মানুষ নিজের শক্তি সম্বন্ধে সচেতন হয়ে উঠল সে কথা এই চিঠিগুলােতে বলা হয়েছে। এ চিঠিগুলাে শুধু একবার পড়েই ফেলে দেবার মতাে নয়, এগুলাে পড়ে আমি নতুন চোখে সব কিছু দেখতে শিখি। এগুলাে মানুষের সম্বন্ধে চিন্তাভাবনা করতে এবং চারপাশের জগৎ সম্বন্ধে আমার মনে আগ্রহ জাগিয়ে তুলেছিল। এসব চিঠি পড়েই প্রকৃতিকে একটি বই হিসেবে দেখতে শিখেছি। ঘন্টার পর ঘন্টা তন্ময় হয়ে আমি পাথর, গাছপালা, পােকামাকড়দের জীবন এবং রাতে আকাশের নক্ষত্র লক্ষ্য করে দেখেছি।