“ফোকলোর তত্ত্ব ও বাংলা লোকসাহিত্য” বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ
লােকসংস্কৃতি বলতে একসময় গ্রামীণ সংস্কৃতিকেই বুঝানাে হতাে। কিন্তু এ ধারণা বর্তমান সময়ে সঠিক বলে। বিবেচিত হচ্ছে না। কারণ আজকাল শহরেও গ্রামীণ সংস্কৃতির কিছু বিষয় উঠে এসেছে। যেমন- বৈশাখী মেলা, নববর্ষ উদ্যাপন, হালখাতা ইত্যাদি। তাই লােকসংস্কৃতি বলতে গেলে গ্রামীণ সংস্কৃতি থেকে এর। একটি বৃহত্তর অর্থ প্রকাশ পায়। বলা যায়, লােকের, জনসাধারণের বা জাতির সংস্কৃতি হচ্ছে লােকসংস্কৃতি। তাই লােকসংস্কৃতির ভেতর একটি বৃহত্তর জীবনের প্রক্রিয়া লক্ষ করা যায়। যেমন- লােকসাহিত্য, লােকসংস্কার, লােকগান, লােকশিল্প, লােকখেলা ইত্যাদি। কিন্তু ফোকলােরের উপাদান শুধুই এই কটি বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তার অবস্থান গ্রাম এবং শহরের বৃহত্তর লােকজীবনের প্রক্রিয়ায়। তবে লােকসংস্কৃতির সূত্র কৃষিকেন্দ্রিক অর্থনৈতিক পরিণতি বা সমাজব্যবস্থার কাঠামাের পরিণতির পর থেকেই বিকাশ লাভ করেছে। জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে বিশেষ করে জন্ম , মৃত্যু, বিবাহ তিনটি ক্ষেত্রে আদিমতার সূত্র রয়ে গেছে। নাগরিক জীবনেও আদিম সংস্কারের ক্ষীণ ধারা প্রবাহিত হচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে সংস্কৃতির ধারা, সংস্কৃতির নানা রূপ।
আলােচ্য গ্রন্থে লােকসংস্কৃতির সংজ্ঞা, তত্ত্ব ও মতবাদ এবং লােকসাহিত্যের নানাবিধ বিষয়ে লিপিবদ্ধ হয়েছে। আশা করি জ্ঞানপিপাসু পাঠকের নিকট গ্রন্থটি সমাদৃত হবে।