“রায়হানের রাজঁহাস” বইয়ের প্রথম ফ্ল্যাপ এর লেখা:
আবু কায়সার মূলত কবি। এরপরও তাঁর বিচিত্র রচনাসম্ভার বাংলা মনন ও সৃজন ধারাকে স্রোতমুখর করেছে। বিশেষ করে এই লেখকের শিশুসাহিত্য পাঠকের আনন্দ-তৃষ্ণা মিটিয়েছে। শিশু-কিশােরদের কল্পনা ও বাস্তবতার যথাযথ মিশেলে যে জগৎ নির্মিত হয়, আবু কায়সার ছিলেন এমন নির্মাণের দক্ষ কারিগর। বিশেষ কবে তাঁর রায়হানের রাজহাঁস বাংলা শিশু-কিশাের সাহিত্যধারায় একটি অভূতপূর্ব সংযােজন। মফস্বল শহরের পটভূমিতে এক কিশােরের চরিত্র আঁকার মধ্য দিয়ে আবু কায়সার । এঁকেছেন চিরকালের গ্রামবাংলাকে, অধিকাংশ । মানুষের কিশােরজীবনের নানা রঙের ছবি। কৈশাের অতিক্রম করে মানুষ জীবনে অন্যান্য স্তরে প্রবেশ করে। কিন্তু তাদের মনে লুকিয়ে থাকে একটি কিশাের মন। রায়হানের রাজহাঁস পাঠে সব বয়সের পাঠক ফিরে পাবেন তাদের ফেলে আসা দিনের স্মৃতিমুখরতা। রায়হানের রাজহাঁস উপন্যাসের মধ্য দিয়ে আবু কায়সার তাঁর লেখালেখির দক্ষতার চমৎকার প্রকাশ ঘটিয়েছেন। কল্পনার সূক্ষতা এবং তা প্রকাশ করার জাদুকরী নিপুণতার গুণে রায়হানের রাজহাঁস হয়ে উঠছে নির্মল আনন্দ উপভােগের চমৎকার। উপন্যাস। আবু কায়সারের কলমের ভাষা ভারি মিষ্টি। পাঠককে সহজ আনন্দে নিয়ে যেতে পারে পাঠের একপর্যায় থেকে নতুন পর্যায়ে। বাংলা শিশুসাহিত্য যথেষ্ট সমৃদ্ধ—এ কথা বলা যায়। তারপরও কিছু ঘাটতি তাে রয়েছেই। আবু কায়সারের রায়হানের রাজহাঁস সেই ঘাটটির বিরাণ প্রান্তরে একটি নতুন বৃক্ষের জন্ম দিয়েছে। এই গ্রন্থবৃক্ষের শাখা-প্রশাখার হিল্লোল আছে, ফুল আছে, আছে গায়ক পাখিদের মধুক্ষরা গান। সব মিলিয়ে রায়হানের রাজহাঁস শিশু-কিশােরমনের নানা আনন্দ এবং জিজ্ঞাসার সঠিক উত্তর । কল্পনার মেঘকে রাজহাঁস বানিয়ে ফেলার এমন জাদুকরী বর্ণনার সাক্ষাৎ মিলবে রায়হানের রাজহাঁস-এর অনেক ইনে, অনেক পঙক্তিতে। এই উপন্যাসটি কালােত্তীর্ণ লেখার মর্যাদায় বহুদিন পঠিত হবে।