আসিফ আমাকে বুঝতে পারেনি। অথবা আমি নিজেকে। কেননা আমরা দুজন কেউই কখনাে সত্যভাষণ করিনি। আমরা ভয় পেতাম। সত্যভাষণ নামক শব্দটিকে আমরা মনে করতাম পাপ। জাগতিক পৃথিবীর এমন একটি প্রচলিত ধারণায় আমাদের বিশ্বাস ছিলাে না। আমরা গোঁজামিলের মানুষ। মিথ্যাচারে অভ্যস্ত। আসিফ বেশির ভাগ সময়ই সন্ধ্যার পর আমার কাছে আসতাে। এ সময়টা ওর প্রিয় ছিলাে। আমার ভালাে লাগতাে পড়ন্ত বিকেল। আসিফ স্বীকার করতাে না। বুঝতাম সম্পর্কের অস্পষ্টতার জন্য ও আঁধার বেছে নিয়েছে। আসলে ও নিজের কাছেই স্পষ্ট নয়।
আসিফ তুমি কি কখনাে তােমার পরিষ্কার বিবেক নিয়ে আমার কাছে এসেছিলে? অথবা আমি তােমার কাছে? ৩২/ডি আজিমপুর কলােনীর নিঃসঙ্গ দুপুরগুলাে আমাদের সম্পর্ককে একটা নির্দিষ্ট কাটাতার বেড়ায় বেঁধে দিয়েছিলাে। আমরা প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যে, আমরা কেউ কাউকে বিয়ে করবাে না। আমরা কি সত্যভাষণ করেছিলাম আসিফ? আমি বুঝিনি। তুমিও না। কেননা পরিচয়ের ঘনিষ্ঠতা যখন স্থিত হয়েছে তখন আমরা দুপুরকে হারিয়েছি। তুমি বেছে নিয়েছাে রাতের আঁধার।। বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনগুলােতে নীল খামে তােমার চিঠি আসতাে। মনে হতাে সমগ্র ব্যাপারটাই তাৎক্ষণিক। আমি চিঠি পড়ে কুটিকুটি করে ছিড়ে ফেলতাম। আমার চিঠি পেলে তুমিও। আমি কখনাে মনে করিনি নীল কাগজের পৃষ্ঠায় তােমার বাজে ভাবনাগুলাে আর জমিয়ে রাখতে হবে। অন্তত আমার কাছে তার কোনাে মূল্য ছিলাে।