পড়লাম ফেরদৌস হাসানের “বন বালিকার গান”। ঢাকা শহরের কর্পোরেট অফিস থেকে গল্প শুরু হয়ে শেষ হয়েছে গিয়ে প্রত্যন্ত এক অজ পাড়া গাঁয়ে। শহরের ঝাঁ চকচকে আলো আর পোশাকের আড়ালে মানুষের অসহায়ত্ব, লোভ, লোভের পরিণাম এসব যেমন এসেছে; তেমন ফুটে উঠেছে এসবের সাথে মানিয়ে নিতে না পেরে পালিয়ে বাঁচতে চাওয়া মানুষের আর্তনাদ। হাজার প্রলোভন ও সুযোগের হাতছানি এড়িয়ে কেউ কেউ খুঁজতে চেয়েছে মানুষ। কারা সেই মানুষ? নির্ঝঞ্ঝাটে সংসার করা সামাজিক মানুষ নাকি সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া ঈশ্বরসন্ধানী কেউ?
বাউল বা লোকধর্মচারী সম্প্রদায়ের জীবনদর্শন লেখক দুটি চরিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন, যা পাঠককে ভাবাবে।
প্রেম এখানে হাতছানি দিয়েছে দু’টি বিপরীত মেরু থেকে। একদিকে চাঁদের পাহাড়, অন্যদিকে নিঃস্ব হওয়ার ঝুঁকি।
চরিত্র সংখ্যা হাতে গোণা। তার ভেতরেও পাঠক নিজের একটি চরিত্র খুঁজে পাবেন। এ কোনো রূপকথা নয়। আমাদের জীবন যাপন ও আকাঙ্ক্ষার একটি মলাটবদ্ধ সংস্করণ। লেখক তাঁর পাখির দৃষ্টি দিয়ে দেখে শুধু আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন।
সমসাময়িক বাস্তবতার অনেক প্রশ্নের উত্তর হয়তো এই উপন্যাসে আছে। চিন্তাশীল পাঠকের মনের খোরাক জোগানোর মতো একটা গল্প, এটুকু বলা যায়।