আমলে ছালেহ

৳ 400.00

লেখক আল্লামা মুহাম্মদ নাসীরুদ্দীন আলবানী (রহঃ)
প্রকাশক আছ-ছিরাত প্রকাশনী
ভাষা Bangla & Arabic
পৃষ্ঠার সংখ্যা ৩৯২
সংস্কার 1st Published, 2021
দেশ Bangladesh

কুরআনুল কারীম ও ছহীহ হাদীছের দলীল দ্বারা প্রমাণিত আমলকে ‘আমলে ছালেহ’ বা সৎ আমল বলে। আর দলীলবিহীন বানোয়াট আমলকে জাল আমল বা বিদ‘আত বলে। আল্লাহর কাছে শিরক মিশ্রিত ঈমানের যেমন কোন অস্তিত্ব নেই, তেমনি বিদ‘আত মিশ্রিত আমলেরও কোন মূল্য নেই। তাই কেউ আল্লাহর সাথে মুলাক্বাত করতে চাইলে তাকে শিরকমুক্ত ঈমান এবং বিদ‘আতমুক্ত সৎ আমল নিয়ে আল্লাহর সামনে হাযির হতে হবে (সূরা আল-কাহ্ফ : ১১০)। কারণ ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলা মানুষের বাহ্যিক অবস্থার মূল্যায়ন করবেন না, বরং ঈমান ও সৎ আমলের মূল্যায়ন করবেন (ছহীহ মুসলিম, হা/২৫৬৪)। কিন্তু দুঃখজনক হল, অধিকাংশ মানুষ বিশুদ্ধ আক্বীদা ও সৎ আমলের বিষয়টিকে গুরুত্বই দেয় না। শুধু বেশি বেশি আমল করা নিয়ে ব্যস্ত। আমলগুলো ছহীহ দলীল ভিত্তিক হচ্ছে কি-না সেটা কেউই ভাবে না। সে জন্য অসংখ্য মানুষ যে সমস্ত আমল নিয়ে ব্যস্ত, সেগুলো দলীল বিহীন এবং যঈফ ও জাল হাদীছ ভিত্তিক। তাই তারা বিভিন্ন ইবাদতে ব্যস্ত থাকলেও তাদের মাঝে কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

আল্লামা মুহাম্মদ নাসীরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) আধুনিক যুগের একজন স্বনামধন্য আলেম। তাঁর জন্ম ইউরোপের মুসলিম অধ্যুষিত দেশ আলবেনিয়ায়। ১৯১৪ সালে আলবেনিয়ার রাজধানী স্কোডারে (বর্তমান নাম তিরানা) তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন আলবেনিয়ার একজন বিজ্ঞ আলেম। পারিবারিক অসচ্ছলতা থাকা সত্ত্বেও দ্বীনদারী ও জ্ঞানার্জনে তাঁরা ছিলেন সুখ্যাতিসম্পন্ন ও সমৃদ্ধ। আলবেনিয়ায় নারীদের পর্দা নিষিদ্ধ করার পর নাসিরুদ্দীন আলবানীর পরিবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে চলে আসেন। দামেস্কে ‘স্কুল অব এইড চ্যারিটি’ নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তাঁর প্রাথমিক শিক্ষাপর্ব শেষ হয়। এরপর প্রচলিত শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে তাঁর পিতা তাকে স্বতন্ত্র পাঠ্যসূচী তৈরি করে দেন। তাঁর তত্ত্বাবধানেই তিনি আল-কুরানুল কারীম, নাহূ, সরফ, তাজবীদ এবং হানাফী ফিকাহ ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান লাভ করতে থাকেন ও একইসাথে কোরআনের হিফযও সমাপ্ত করেন। ইসলামী শাস্ত্রে সুপন্ডিত এই আলেম ঘড়ি মেরামতের কাজকে পেশা হিসেবে নেন। এর অন্যতম কারণ ছিল জ্ঞানার্জন ও গবেষণার জন্য কিছু সময় বের করে নেওয়া। নাসীরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) এর জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হলো সিরিয়ায় তাওহীদ ও সুন্নাহর দিকে দাওয়াত এবং এর পরবর্তী ঘটনাদি। এই কারণে অনেকেই তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করে এবং তাকে বিভিন্ন প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়। তবে তাঁর এই মতবাদের সাথে দামেস্কের প্রসিদ্ধ আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করায় তিনি এগিয়ে যেতে উৎসাহ পান। শাইখ আলবানী দামেস্ক, মিশর ও সিরিয়ার বিখ্যাত সব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার প্রস্তাব পান। তবে গবেষণার কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে তিনি যোগ দেননি। তিনি মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য হিসেবেও মনোনীত হন। আল্লামা মুহাম্মদ নাসীরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) এর বই সমগ্র, গবেষণাপত্র ও বক্তব্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রকাশিত হয়েছে এবং ইসলামী চিন্তাবিদ ও আলেমদের কাছে সমাদর লাভ করেছে। তিনি কুয়েত, আরব আমিরাত ও ইউরোপের কয়েকটি দেশে বক্তা হিসেবে ভ্রমণ করেছেন। আল্লামা মুহাম্মদ নাসীরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) এর বই সমূহ হলো ‘আত-তারঘিব ওয়া আত-তারহিব (চার খণ্ড)’, ‘আত-তাসফিয়াহ ওয়া আত-তারবিয়াহ’,’সহীহ ওয়া যাই’ফ সুনান আত-তিরমিযী (চার খণ্ড)’ ইত্যাদি। তাঁর রচিত বইয়ের সংখ্যা এক শতাধিক। হাদীস ও ফিকহ শাস্ত্রে পারদর্শী এই আলেম ১৯৯৯ সালে বাদশাহ ফয়সাল পুরষ্কারে ভূষিত হন। একই বছর জর্ডানে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন →
বই সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাসা বা মতামত থাকলে আমাদেরকে জানান
শেয়ার করুন

লেখকের অন্য বইসমূহ

প্রকাশকের অন্য বইসমূহ