চট্টগ্রাম । আমাদের জন্মভূমি। পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন বন্দর-শহর। পণ্ডিতেরা বলেন, যে-জাতির অতীত যত দীর্ঘ এবং স্বচ্ছ সে-জাতি ততবেশি সভ্য। একটা জাতির বা জনগােষ্ঠির যদি অতীত কৃষ্টি, ঐতিহ্য, জীবন-জীবিকার সামূহিক সংগ্রাম, সংস্কৃতি ধারণা স্পষ্ট না থাকে, তাহলে সেই জাতি বা জনগােষ্ঠির ওপর কোন সভ্যতা অতিক্রম করা সম্ভব নয়। সভ্যতার আলােকে এই জনপদ কতাে প্রাচীন, তা আজও স্পষ্ট নয়। ইতিহাসবেত্তারা চট্টগ্রাম বন্দরকে কেন্দ্র করে এই অঞ্চলের অতীত ইতিহাস নিরূপণের চেষ্টা করেছেন, কিন্তু তাতেও প্রয়ােজনীয় তথ্য-উপাত্তের অভাব পরিলক্ষিত। চট্টগ্রামের ইতিহাস সম্ভবত দশ হাজার বছরেরও অধিক হতে পারে। তার প্রমাণ আধুনিক চট্টগ্রাম নগর হতে বিশ কিলােমিটার দূরে সীতাকুণ্ড পর্বতে প্রাপ্ত কৃপাণ হতে মেলে। কৃপাণগুলাে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পণ্ডিতরা এই মত পােষণ করেন যে, আট থেকে দশ হাজার বছর আগে এই জনপদে মানববসতি গড়ে উঠেছিল। সেই ইতিহাস আমাদেরকে কোন প্রাচীন যুগের গহীনে নিয়ে যাবে, তা ভেবে পুলকিত হতে হয়। তবে পুরাকীর্তির সুরক্ষা না-থাকার কারণে এককালে যা দৃষ্টিনন্দন স্থাপনাকীর্তি গড়ে উঠেছিল অন্যকালে তা-ই হয়ে যায় প্রত্নতাত্ত্বিক ধ্বংসাবশেষ। কালের নিষ্ঠুর আঁচড়ে এমনটি হওয়ায় আশ্চর্য হবার কিছু নেই। যুদ্ধবিগ্রহ ও দখল-বেদখলে পরাশক্তির বর্বরতায় এমনটি ঘটেছে চট্টগ্রামে।