বাংলাদেশের কবিতায় বহুল উচ্চারিত নাম কবি নাসির আহমেদ। গত প্রায় চারযুগ ধরে সাধকের নিষ্ঠায় কবিতাকে করে তুলেছেন প্রগাঢ় শিল্পময়। সমকালের সঙ্গে মিলিয়েছেন। চিরকালের দার্শনিক ভাবনাকে।
বিষয়বৈচিত্র্যে, আঙ্গিক প্রকরণের নানা নিরীক্ষায় বহুমাত্রিক দ্যুতিতে দেদীপ্যমান তার কবিতা। উচ্চারণমাত্র চেনা যায় তার স্বতন্ত্র কবিকণ্ঠ। ধর্ম-দর্শন প্রেম-মৃত্যুসহ কত বিচিত্র বিষয়ই না সহজাত প্রতিভায় শৈল্পিক করে তােলেন এই কবি। সরল বাক্যের অন্তরালে বহুমাত্রিক প্রতীকী অর্থব্যঞ্জনা সৃষ্টির এমন আলাে-আঁধারির হেঁয়ালি তিনি রচনা করতে সক্ষম, যা চিরকালই সব মহৎ কবির আরাধ্য। শামসুর রাহমান, সৈয়দ শামসুল হক, আলাউদ্দিন আল আজাদ, মােহাম্মদ মনিরুজ্জামান, আহমদ রফিক, সিকদার আমিনুল হক, আবদুল মান্নান সৈয়দসহ অগ্রজ কবিরা তার কবিতা সম্পর্কে উচ্ছ্বসিত মন্তব্য করেছেন। সৈয়দ শামসুল হক নাসির আমাদের বৃক্ষমঙ্গল’-এর উদ্ধৃতি দিয়ে মন্তব্য করেন : এই একটি উদ্ধৃতিতেই বােঝা যাবে কবিতায় কতটা স্বরাট সার্বভৌম তিনি, নাসির আহমেদ, প্রকৃতি ও বৃক্ষের রাজ্যে; রবীন্দ্রনাথের শেকলভাঙা এখনাে এবং আজো একটি উল্লেখযােগ্য ঘটনা।
কবিতাসংগ্রহ-৩-এ কবির একাত্তরের পদাবলীসহ এমন ছয়টি কাব্যগ্রন্থ সংকলিত হলাে, যা তার ধারাবাহিক অগ্রযাত্রারই স্মৃতিবহ কাব্যফসল। এসব কাব্যগ্রন্থ এখন বাজারে পাওয়াও যাচ্ছে না। এক মলাটে কবি নাসির আহমেদের ত্রয়ােদশ থেকে অষ্টাদশতম কাব্যগ্রন্থ পাওয়া কাব্যানুরাগী পাঠকদের জন্য নিঃসন্দেহে আনন্দের উপকরণ বিবেচিত হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।