“একেই বলে শুটিং” বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ
ফিল্ম তৈরির কাজটাকে মােটামুটি তিন ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথম হল লেখা, ‘দ্বিতীয় ছবি তােলা, আর তৃতীয় ছবি জোড়া। যে ছবি লােকে পর্দায় দেখবে, সেটাই প্রথমে গল্পের মতাে করে গুছিয়ে লেখা হয়। একে বলে চিত্রনাট্য। এই চিত্রনাট্য অনুসরণ করে যখন ছবি তােলা শুরু হয়, তখন সে কাজটার জন্য প্রধান হাতিয়ার হল ক্যামেরা আর শব্দযন্ত্র। এই কাজটাকেই বলে শুটিং। শুটিং হয়ে গেলে, টুকরাে টুকরাে ভাবে তােলা দৃশ্যগুলাে চিত্রনাট্যে যেমন আছে তেমন করে পর পর সাজিয়ে যে জিনিসটা তৈরি হয় সেটাই লােকে পর্দায় দেখে।
এর মধ্যে শুটিং পর্বের কাজেই সব চেয়ে বেশি ঝামেলা আর পরিশ্রম। এই কাজটা অনেক সময় স্টুডিওর ভিতর না হয়ে হয় বাইরে, প্রাকৃতিক পরিবেশে। গত পঁচিশ বছরে আমাকে ছবির শুটিং-এর জন্য ভারতবর্ষের নানান জায়গায় যেতে হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ঘােরাঘুরি হয়েছে তিনটে ছবিতে-গুপী গাইন বাঘা বাইন, সােনার কেল্লা, আর জয় বাব ফেলুনাথ। বীরভূমের গ্রাম, বেনারসের অলিগলি আর ঘাট, সুদূর পশ্চিম রাজস্থানের মরু অঞ্চল, সিমলার বরফের পাহাড় ইত্যাদি বিভিন্ন জায়গায় শুটিং করতে গিয়ে আমাদের যে সব অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হয়েছে, তারই কয়েকটার কথা বলা হয়েছে এই বইতে। এই ধরনের ঘটনা ঘটে বলেই অনেক সময় মেহনতটা আর গায়ে লাগে না। আর বাধা যে সব আসে, সেগুলাে অতিক্রম করে কাজটা যদি ঠিক মতাে উৎরে যায় তাহলে ত আর কথাই নেই।