‘শােন এরিকা, তােমাকে একটা কথা শুধাই । পরিণত একজন সাধারণ মানুষের মগজের বহর কত হতে পারে? এক কর্ণ থেকে আরেক কর্ণ পর্যন্ত?’ ‘ভেবে দেখিনি তাে কোনােদিন।’ ‘ধর পনেরাে থেকে সতেরাে সেন্টিমিটার? মনে রেখাে আধেয় জ্ঞান যেখানে অসীম, সেখানে তার এ আধারটুকু কিন্তু সসীম। অর্থাৎ একজন মানুষের, একটি জীবনের একটি মস্তকের আহরিত জ্ঞানের ধারণ স্থানিকভাবে এই সতেরাে সেন্টিমিটারেই সীমাবদ্ধ। একদিকে জ্ঞান হল মহাকালের পুঞ্জিত পরিমাণ। আরেকদিকে তা রক্ষা করার স্থান হল দৈর্ঘ্যে-প্রস্থে মাথাপিছু মাত্র এইটুকু। গ্রেশাম’স ল বলে : খারাপ মুদ্রার সারকুলেশন বেড়ে যাওয়ার ফলে ভালাে মুদ্রা বাজার থেকে বিতাড়িত হয়। এই ল-টিকে মুদ্রার ক্ষেত্র থেকে জ্ঞানের ক্ষেত্র পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা চলে। অর্থাৎ বর্তমানে ঋণাত্মক জ্ঞানের বিক্রয় বেড়ে যাওয়ার ফলে, নিতান্ত বস্তুগত কারণেই ধনাত্মক জ্ঞান আমাদের মস্তিষ্ক থেকে বিদূরিত হচ্ছে। বরং বলা যাক, উপকারী জ্ঞানের বদলে অপকারী জ্ঞানেই ক্রেতার মগজটা আজ ভরে যাচ্ছে (উপযােগীকৃত)। কারা এই ঋণাত্মক জ্ঞানের বিক্রেতা এবং কেন, আর কারাই বা এর ক্রেতা এবং কেন; এসব বিষয়ই এ উপন্যাসটির উপজীব্য। অন্যকথায়, বিশ্বের কেন্দ্রীয় এবং প্রান্তীয় দেশগুলির মধ্যে বিরাজমান অবশ্য সম্পর্কের স্বরূপ দর্শন করায় এই উত্তর-দক্ষিণ সংলাপ।