“তিস্তা যাবেই” বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা:
প্রত্যন্ত গ্রাম, নগর, বিদেশের সর্বাধুনিক শহর এই উপন্যাসের মানচিত্র। চরিত্ররা কিন্তু আমাদের আশপাশের চেনা-অচেনা মানুষজন। তাদের সুখদুঃখগুলাে অনায়াসে ছোঁয়া যায়। এ সময়ের বলিষ্ঠ তরুণ কথাকার সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়ের কলমে ফুটে উঠেছে তৃতীয় বিশ্বের ঐতিহ্যের ওপর বিশ্বায়নের অভিঘাত। উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র পরাগ ছবি আঁকে। শিল্পকর্মটি ঠিক মত করে যাওয়াই তার একমাত্র উচ্চাকাঙ্ক্ষা। প্রেম তার কাছে যত না কামনার তার থেকেও বেশি স্বপ্ন দেখার বিশ্বস্ত আধার। তুলনায় প্রেমিকা তিস্তা বাস্তববাদী ও আত্মােমতিকামী। সমুদ্রের ধারে এক প্রবল ঝড়-বৃষ্টির সন্ধেতে তিস্তার সমস্ত হিসেব গােলমাল হয়ে যায়। অপ্রস্তুত অবস্থায় পরাগের সমস্ত মনােযােগ কেড়ে নেয় সে। সেই সুন্দর ভুলের ফলে এসে পড়ে অসময়ের সন্তান। পরাগ আপ্লুত হলেও তিস্তা গ্রাহ্য করে না। পরাগের মতামত ছাড়াই নষ্ট করে তাদের প্রথম সন্তান। উপন্যাসের আরেকটি প্রধান চরিত্র যােগব্রত। মধ্যবিত্ত সংসারের মেধাবী ছাত্র এখন সাফল্য ও উন্নতির শেষ চূড়ায়। কিন্তু অর্জন বলতে শুধুই একাকীত্ব। বিদেশ থেকে কিছুদিনের ছুটিতে এসেছিল মাতৃভূমির টান উপলব্ধি করতে। কেউ সেভাবে বললে, থেকে যাবে এখানে। কেউ বলেনি। স্কুলবেলার শিক্ষক দিবাকর স্যারের বাড়িতে গিয়ে দেখা হয়েছিল স্যারের ছােটমেয়ে তিস্তার সঙ্গে। যেন কিছুটা অতীত ফেরত পেয়েছিল যােগব্রত। পরাগের উপেক্ষায় তিস্তা তখন বিষগ্ন। যােগব্রতর স্নিগ্ধ উপস্থিতি তিস্তাকে নতুন জীবনের আশ্বাস দেয়। যােগব্রতর সঙ্গে আমেরিকায় চলে যেতে চায় সে। | লেখকের দক্ষ হাতের সুঠাম নিয়ন্ত্রণে উপন্যাসের মূল চরিত্ররা হয়ে উঠেছে এই সময়ের আক্রান্ত এক প্রজন্ম। এদের মাঝে মানস প্রতিবন্ধী কিশােরই একমাত্র ব্যতিক্রম। ঋষিপ্রতিম নীরব এই বালকের কাছেই যেন সময় থমকে দাঁড়িয়েছে। হয়ত এখান থেকেই শুরু হবে নতুন আগামীর।