আমার মাকে আজ মাটি দিয়ে ফিরলাম। গর্ভে তিনি ধরেছিলেন। কতনা দুঃখের সহন তাঁর গেছে আমাকে নিয়ে। বুঝি তাঁর জীবনকে নিয়েই! যে-জীবনের ছবি এখন আমি একটু একটু করে গড়ে তুলছি। আমি জানি এখন হবে এই আমার কাজ। তাঁর জীবনের গল্পটা শেষ পর্যন্ত যে আমারই গল্প হয়ে উঠবে, এটিও এখন আমি অনুমান করে উঠছি। মায়ের মৃত্যুর আগে প্রায় এক মাস যাবত বারেবারেই আমি একটি স্বপ্ন পাচ্ছিলাম প্রায় প্রতি রাতেই। শাদা একটি ঘোড়া। দাঁড়িয়ে আছে ঘোর কুয়াশার ভেতরে। যেন সে কুয়াশা দিয়েই তৈরি। এক পা তুলে আছে। যেন এক্ষুনি সে ছুটে যাবে। অথবা ছুটে যেতে যেতে হঠাৎ থমকে দাঁড়িয়েছে। হয়তো আজ রাতে স্বপ্ন আবার পাবো। সেই স্বপ্ন। কুয়াশায় শাদা ঘোড়া! কুয়াশা নয়, স্বপ্নে আমি জোছনা আর কুয়াশা এক করে ফেলেছি। ওটি জোছনাই। সেই জোছনা! সেই পূর্ণিমার জোছনা রাতে টগরের হাতখানি হাতের ভেতরে নিয়ে চাঁদের দিকে আমাদের দুজনের অপলক তাকিয়ে থাকা। ঘোড়াটিও আমাদেরই মতো স্বপ্নবিহ্বল হয়ে থমকে দাঁড়িয়েছিলো পা তুলে। আজ রাতে স্বপ্নটা যদি ফিরে আসে, হয়তো দেখবো পা নামিয়ে নিয়েছে, ঘোড়াটি চলতে শুরু করেছে।