এই আখ্যান কোনাে এক অগ্নিবলয়ের রূপকথা হয়ে বিষাদে, বেদনায়, বিষন্নতার মেদুর আবীর হতে হতে কখন যেন মিলিয়ে যেতে গিয়েও সম্পূর্ণভাবে অদৃশ্য হয় না। কোনাে ধ্রুপদী রাগসঙ্গীত, তান যেমন একই সঙ্গে পাশাপাশি তৈরি করে নিতে পারে পুষ্পঘ্রাণ আর বারুদগন্ধ, সেভাবেই এগােতে থাকে এই গদ্য নির্মাণের চলন।
সত্তরের সেই কালাপাহাড়ী কালবেলায় – ১৯৭২-৭৩ – ৭৪-৭৫-এ যারা ঝাণ্ডাবদল করেছিল অথবা করতে বাধ্য হয়েছিল, তাদের কয়েকজনকে নিয়েই এই কাহিনী-বুনন। জেল জীবনের অভিজ্ঞতা, দিনের পর দিন কারাবাসের কষ্ট কথা-কল্পনা আর দুঃখযাপনের মহা ক্রান্তিময় ক্ষণমুহূর্ত, দীর্ঘ টানা সময় নিয়েই এই কথাযাপন।
জেলখানার নির্মম-নিষ্ঠুর, হৃদয়হীন দিনগুলি-রাতগুলির সঙ্গে সঙ্গে একদা বিপ্লবী রাজনীতিতে বিশ্বাসী কোনাে এক তরুণ জিজ্ঞাসুপ্রাণের নিয়ত সংলাপই এই কাহিনীরেখার ধারাস্রোত। জেলজীবনের অভিজ্ঞতালব্ধ এই আখ্যান সমৃদ্ধ করল বাংলা সাহিত্যের বহতা নীরমালাকে।