“দুই সৈনিক” বইটির সম্পর্কে কিছু কথা:
গ্রামের পটভূমিতে লেখা শওকত ওসমানের একটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস হল দুই সৈনিক। বেতারের সংবাদই তখন জীবন সঞ্জীবনী। কলকাতা বেতার শুনছে সাহেলী ও চামেলী। বাবা মখদুম মৃধা; তিনি মৌলিক গণতন্ত্রী ছিলেন, উনসত্তরে গণঅভ্যুত্থানের সময় সাজাও পেয়েছেন। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তিনি দ্বিধায় আছেন। একটি গ্রামীণ প্রতিবেশে উপন্যাসের কাঠামাে নির্মাণ, ইতিহাসের সভ্যতা তার পরিপূরক হয়ে আসে। প্রথম দুপর্বে চরিত্রগুলাের পারস্পরিক কথােপকথনে জানা যায় একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে দেশের স্বাধীনতা, শেখ মুজিব কিংবদন্তিতে পরিণত হয়েছেন, নির্বাচনে জিতেছেন। মখদুম মৃধার দুই মেয়ে সারাক্ষণ ট্রানজিস্টার নিয়ে দেব দুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠ শুনছেন। রণেশদাশ গুপ্তের মতে, দুই সৈনিক হচ্ছে হানাদার বাহিনীর দুই মদমত্ত অফিসার। ৭১ সালের ২৫ মার্চ হানাদার বাহিনী সারাদেশে যে হামলা চালায় তার দুই মূর্তিমন্ত প্রতীক। তাদের পাশবিক ক্রিয়াকলাপ উপন্যাসটির ঘটনা তরঙ্গ সৃষ্টি করে। এই জন্যই সম্ভবত উপন্যাসের নাম দুই সৈনিক। কাহিনি বর্ণনা করতে গিয়ে সচেতন লেখক শওকত ওসমান সমসাময়িক বাংলাদেশের রাজনীতি, সামাজিক পরিবেশ বিশেষ করে সাম্প্রদায়িকতা এবং বাঙালির অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্যের কথা বলতে ভােলেননি।