“ডায়াবেটিস রোগে কী খাবেন ২০১টি পরামর্শ” বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ
এ বইতে ডায়াবেটিস রােগ সম্পর্কিত যত রকমের প্রশ্ন- খাদ্য সম্বন্ধে, মানসিক চাপ সম্বন্ধে, দৈহিক ব্যায়াম সম্বন্ধে এবং বিবিধ ধরনের বিষয় সম্বন্ধে, সব প্রশ্নের উত্তর অতি সহজ ভাষায় দেয়া হয়েছে। আপনারা এ ধরনের সহজ উত্তর এর আগে পান নি।
বর্তমান যুগে ডায়াবেটিস রােগ একটা সাধারণ অসুখ। ভারতসহ পৃথিবীতে এ রােগের রােগীর সংখ্যা দ্রুত হারে বাড়ছে। এটা একটা দীর্ঘস্থায়ী রােগ এবং একটি মন্থর ঘাতক রােগও বটে। এ রােগ মানুষকে হত্যা করে, কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, হৃদরােগের সৃষ্টি করে, গভীর সংজ্ঞাহীন অবস্থার সৃষ্টি করে কিংবা দেহকোষের পচনের সৃষ্টি করে। আপাতত যদিও এ রােগের কোনাে স্থায়ী প্রতিষেধক নেই, তবু একটা উজ্জ্বল আশার আলাে আছে। জীবনধারণ প্রণালির পরিমার্জনের দ্বারা শিক্ষা ও খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের দ্বারা এ রােগকে পুরােপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা যায়। এ রােগের বাড়াবাড়ি অবস্থা থেকে রােগীকে সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় আনা যায় এলােপ্যাথির সঙ্গে আয়ুর্বেদিক ওষুধের সমন্বয় ঘটিয়ে এবং ইনসুলিন ব্যবহার করে। তার সঙ্গে অবশ্য জীবনধারণ পদ্ধতির পরিবর্তনও করতে হবে।
ডায়াবেটিস এমন একটা রােগ যা তৈরি হয় রােগীর অজ্ঞতা এবং স্বাস্থ্য সম্বন্ধে উদাসীন মানসিকতা থেকে। বেশিরভাগ রােগী এ রােগের কারণ সম্বন্ধে সচেতন হন তারা এটা জানেন না, কোন কোন বিষয়গুলাে এ রােগকে বাড়িয়ে দেয় এবং কোন্গুলাে নিরাময় করে। যদিও তারা কিছু কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তবু বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক অবহেলিত থেকে যায়। ফলে রােগটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ক্রমশ রােগী স্থূলকায় হতে থাকেন। তার রক্তের চাপ বেড়ে যায়। রক্তে কোলেস্টেরল ও চর্বির পরিমাণ বেড়ে যায়। এরপর রােগী চিকিৎসকের কাছে যান এবং চিকিৎসক কিছু ওষুধ স্থায়ীভাবে সেবন করার পরামর্শ দেন। যদি এ রােগীদের যথাযথভাবে রােগ সম্বন্ধে শিক্ষিত করে তােলা যায়, খাদ্য সতর্কতা সম্বন্ধে সচেতন করে তােলা যায়, তারা যদি প্রতিদিন কিছুটা সময় শারীরিক পরিশ্রম করেন, কিছুটা মানসিক চাপ হ্রাস করতে পারেন, তবে তাঁদের স্থায়ী চিকিৎসার জন্য ওষুধ এবং ইনসুলিন ব্যবহার করতে হবে না।
এ বইটি একান্তভাবে সেসব রােগীর জন্য, যারা নিজেরাই নিজেদের যত্ন নিতে চান। বইয়ের প্রথম অধ্যায়ে অতি সহজ ভাষায় স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, এ অসুখটা ঠিক কি? এ রােগের বিপজ্জনক উপাদান কি কি? এ রােগের চিহ্ন ও লক্ষণগুলাে কি কি? পথ্য ও ব্যায়াম কি ধরনের হওয়া উচিত? পরবর্তী অধ্যায়ে এ রােগ সম্পর্কে বহু প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়েছে। পাঠক যদি ডায়াবেটিস রােগের রােগী হন কিংবা এ রােগ প্রতিরােধ করতে চান তবে তিনি এ বইতে ঠিক যে প্রশ্নগুলাের উত্তর জানতে চান, ঠিক সেই উত্তরগুলাে সহজে পাবেন।