ছোটদের ছোট ছোট আবদার। কখনো বুঝে আবদার করে কখনো না বুঝে আবদার করে। যখন না বুঝে আবদার করে তখন তাকে সুন্দরভাবে বোঝালে অবশ্যই সে বুঝবে। এই যেমন জায়ানের আবদার একটি পাখি খাঁচায় ভরে পোষার। কিন্তু তার বাবা যখন তাকে বোঝাল যে পাখিরা মুক্ত থাকলেই ভালো থাকে তখন জায়ানও সেই কথা বুঝে গেল।
রাব্বানী চৌধুরীর লেখা ‘জায়ানের সুন্দর পাখি’ বইটিতে এমনই একটি শিক্ষামূলক গল্প রয়েছে। ১৬ পৃষ্ঠার রঙিন বইটিতে এই একটিমাত্র গল্পই রয়েছে। এটি সদ্য পড়তে শেখা শিশুদের জন্য উপযুক্ত একটি বই। শিশুরা পড়ার থেকেও ছবি দেখতে বেশি আকর্ষণ বোধ করে। সে কথা মাথায় রেখেই বইটি সাজানো হয়েছে। প্রচ্ছদ থেকে শুরু করে পুরো বইটি চমৎকার সব ছবিতে সাজানো।
গল্পের মধ্যে প্রকৃতির বর্ণনা এতই চিত্তাকর্ষক যে পড়তে গেলে মনে হয় যে বাস্তবেই এমনটা। যেমন―‘সন্ধ্যার পর থেকেই ঝুমঝুম বৃষ্টি। কী দারুণ রিমঝিম বৃষ্টির মিষ্টি সুর। মিষ্টি সুরে জায়ানের চোখজুড়ে ঘুম নামে। রাত শেষে ভোরের সোনালি আলো ভেসে ওঠে। ঝলমলে করে প্রকৃতি। পাতায় পাতায় বাতাসের খেলা। বাগান আলো করে ফুটছে বাহারি ফুল। ফুলের মনকড়া সৌরভে ম ম চারদিক।’
জায়ানের যে পাখি দেখে ভালো লেগেছিল সেই পাখির নাম নীলকণ্ঠ পাখি। পৃথিবীতে যে কত প্রজাতির পাখি আছে তা আমরা জানি না। একেকটা পাখি একেক রকম দেখতে। নানা রকমের রং আর নানা স্বরে তাদের ডাক। শহুরে মানুষেরা অনেকেই খাঁচায় পাখি পুষতে ভালোবাসে। ফলে পশুপাখিদের একটা মার্কেট গড়ে ওঠে! এটা প্রকৃতির জন্য হুমকিস্বরূপ। এতে প্রাণীদের বশংবৃদ্ধি ও স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হয়। তাই আমরা নিজেরা তো এই কাজ থেকে বিরত থাকবই, সেইসাথে অন্যরা যাতে এ কাজে লিপ্ত না হতে পারে সে বিষয়েও সচেতনতা বৃদ্ধি করব।
একটি কথা আছে, ‘বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে।’ অর্থাৎ বনের পাখি বনেই সুন্দর লাগে। তাদের খাঁচায় বন্দি করে তাদের সৌন্দর্য নষ্ট করা মোটেই উচিত নয়। বইটি সংগ্রহ করে আপনার শিশুর হাতে তুলে দিন আর তার পাঠ অভিজ্ঞতার কথা জানতে চাইলে সে এককথায় বলে দেবে―দারুণ!