ফ্ল্যাপে লিখা কথা
ট্রাফিক বাতি বদলের অপেক্ষায় গাড়িতে থাক অবস্থায় অন্ধ হয়ে গেল প্রথম জন। তাকে অপথালমোলজিস্টের কাছে নিয়ে গেল তার স্ত্রী। ব্যাপারটার মাথামুণ্ডু কিছু্ই বুঝতে পারলো না ডাক্তার – রাতে টেক্সট বই পাঠ করার সময় অন্ধ হয়ে গেল নিজেই। দ্রৃত মহামারী হতে চলা রোগটিকে নিয়ন্ত্রনে রাখতে পূর্ণাঙ্গ কোয়ারেন্টাইনের উদ্দেশ্যে অন্ধদের জড়ো করে এক মানসিক রোগের অ্যাসাইলামে আটক করল সরকার। এক ইউংয়ে অন্ধ এবং অন্য ইউংয়ে রাখা হল ওদের সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদের। ওদের পলায়ন ঠেকাতে সশস্ত্র প্রহরার ব্যবস্থা করা হল। কিন্তু তাতে মহামারী ঠেকিয়ে রাখা গেল না। একসময় অন্ধরা একটা সমাজে নিজেদের সংগঠিত করে তুলল যেটা মোটেই ইউটোপিয়ান ধরনের নয়। তারপরেও চার দেওয়ালের বাইরে ছড়িয়ে পড়ল অন্ধত্ব; কেবল সেই ডাক্তারের স্ত্রী ছাড়া কেউ রেহাই দিল না। স্বামীর সঙ্গে বিছিন্নতা এড়াতে নিজেকে অন্ধ বলে দাবী করেছে ও , নিউক্লিয়াস হল ও-ই- তিনজন পুরুষ,তিনজন মহিলা, একটা ছেলে আর একটা কুকুর- যাদের বিশেষ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করা হয়েছে এ কাহিনীতে।
এই উপন্যাসে হোসে সারামাগো সত্যিকারের দুঃস্বপ্ন সৃষ্টি করেছেন। সমাজবদ্ধ জীবন যাপনের এক সামগ্রিক কাঠামো ধ্বংস এবং পারস্পরিক সহযোগিতা ওদায়িত্ব একে একে ছিন্ন হয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে এক অগ্রসর নাগরিক সমাজ দ্রুত পরিনত হলো বর্বর সমাজে। সযত্ন রচনাম যতিচিহ্নের আরোপিত অনুপস্থিতি ও কালের অসামঞ্জস্যতা পাঠকে সূক্ষ অর্থের দিকে মনোযোগ দিতে বাধ্য করে। পরিণতি একটা চ্যালেঞ্জিং ,চিন্তা জাগানিয়া , পরিহাসময় উপন্যাস ,সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যেকোনও ভাষায় প্রকাশিত উপন্যাসের ক্ষেত্রে যা বিরল।