আলোছায়া

৳ 250.00

লেখক সুচিত্রা ভট্টাচার্য
প্রকাশক আনন্দ পাবলিশার্স (ভারত)
আইএসবিএন
(ISBN)
9788177562958
ভাষা বাংলা
পৃষ্ঠার সংখ্যা ১৫৫
সংস্কার 1st Edition, 2003
দেশ ভারত

“আলোছায়া” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
সমাজসেবিকা নিবেদিতা তাঁর সুহাসিনী ওয়েলফেয়ার সােসাইটি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। ওঁর স্বামী আর্য সবসময় মগ্ন বইপড়ায় আর পানীয়তে। ঘরজামাই বলে এই গুহায়িত মানুষটি সারাজীবন সংকুচিত হয়ে আছেন। নিবেদিতার বড় ছেলে অনিন্দ্য সদ্যবিবাহিতা স্ত্রী শরণ্যাকে নিয়ে হানিমুন করতে গেল দার্জিলিং-এ। মধুযামিনীর কয়েকটি দিন শরণ্যার তেমন ভাল লাগল না। বরং সে আবিষ্কার করল অনিন্দ্য সব ব্যাপারে ভয়ানক উদাসীন। নাকি হৃদয়হীন! সুনন্দ, নিবেদিতার ছােট ছেলে, বহুদিন বাড়ি ছাড়া। সম্রান্ত এই পরিবারের সব সদস্যই যেন এক একটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ বন্ধনহীন, শিথিল, সম্পৰ্কশূন্য। এরই মধ্যে নিবেদিতার সুহাসিনী সমিতিতে শুরু হয়ে গেল তাঁকে ক্ষমতাহীন করে দেবার চক্রান্ত। অনিন্দ্যর বিচিত্র মানসিকতা, সে সন্তান চায় না। সন্তানসম্ভবা হলেও সেই সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে গেল শরণার। এর পিছনে কি ছিল অনিন্দ্যর অদৃশ্য হাত? এই ঘটনার অনিবার্য পরিণতি হল দুজনের বিবাহ-বিচ্ছেদ। মানসিকভাবে রিক্তা শরণ্যা আশ্রয় পেল তারই একদা সহপাঠী শুভ্রর কাছে। কিন্তু ঠুলি পরা চোখে এক বা দৌড়ে নিবেদিতা এ কোথায় এসে পৌঁছলেন? সুচিত্রা ভট্টাচার্যের এই গভীর উপন্যাসে উন্মােচিত হয়েছে ভিন্ন মেরুর মানুষদের আকর্ষণ-বিকর্ষণের কাহিনী, তাদের বিচিত্র জীবনবৃত্তান্ত।

সুচিত্রা ভট্টাচার্য বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে আত্মপ্রকাশ করা একজন ভারতীয় বাঙালি সাহিত্যিক। সুচিত্রা ভট্টাচার্যের বই সমূহ পাঠকদের প্রবলভাবে টানতে পেরেছে সমসাময়িক মধ্যবিত্ত শহুরে জীবনের টানাপোড়েন, পরিবর্তনশীল মূল্যবোধ আর নৈতিক অবক্ষয়কে ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমে। সেই সাথে নারীর জীবনের দুঃখ-যন্ত্রণা, অনুভূতিগুলোও ছিলো সুচিত্রা ভট্টাচার্য এর বই সমগ্র’র আরেক উপজীব্য বিষয়। সুচিত্রা ভট্টাচার্য ১৯৫০ সালের ১০ই জানুয়ারি বিহারের ভাগলপুরে মামারবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও লেখিকার বাবার বাড়ি ছিলো মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরে। কিন্তু লেখিকার স্কুল ও কলেজ জীবনের পুরোটাই কাটে কলকাতা শহরে। কলকাতার যোগমায়াদেবী কলেজ থেকে তিনি স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে যান উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষালাভের সময়ই তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। কর্মজীবনে প্রথমে বিভিন্নস্থানে চাকরি করে সরকারি চাকরিতে থিতু হন। কিন্তু ২০০৪ সালে পুরোপুরিভাবে লেখালেখিতে মনোনিবেশ করার জন্য চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে দেন। প্রায় সাড়ে তিন দশকের দীর্ঘ সাহিত্যিক জীবনে সুচিত্রা ভট্টাচার্য অসংখ্য ছোটগল্প ও চব্বিশটি উপন্যাস রচনা করেছেন। তিনি বাংলা সাহিত্যে ‘মিতিন মাসি’র মতো নারী গোয়েন্দা চরিত্র সৃষ্টি করে গিয়েছেন যা পাঠকদের কাছে আজও সমান জনপ্রিয়। সুচিত্রা ভট্টাচার্যের ছোটগল্পগুলো দিয়েই মূলত তিনি সাহিত্যে প্রবেশ করেন। কিন্তু তাঁর রচিত উপন্যাসগুলো তাঁকে লেখক হিসেবে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কাছের মানুষ, দহন, কাচের দেওয়াল, হেমন্তের পাখি, নীল ঘূর্ণি, অলীক সুখ, গভীর অসুখ, উড়ো মেঘ, ছেঁড়া তার, আলোছায়া, অন্য বসন্ত, পরবাস, পালাবার পথ নেই, আমি রাইকিশোরী ইত্যাদি। সুচিত্রা ভট্টাচার্যের উপন্যাস গল্প ‘দহন’ অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মাতা ঋতুপর্ণ ঘোষ ১৯৯৭ সালে একই নামে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এছাড়াও লেখিকার উপন্যাস অবলম্বনে ‘ইচ্ছে’, ‘রামধনু’, ‘অলীক সুখ’, ‘অন্য বসন্ত’ এর মতো বেশ কিছু জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। সাহিত্যে অবদানের জন্য এই বাঙালি নারী সাহিত্যিক কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুবনমোহিনী মেডেল (২০০৪), কথা পুরস্কার (১৯৯৭), তারাশংকর পুরস্কার (২০০০), দ্বিজেন্দ্রলাল পুরস্কার (২০০১), শরৎ পুরস্কার, ভারত নির্মাণ পুরস্কার, সাহিত্য সেতু পুরস্কার, শৈলজানন্দ স্মৃতি পুরস্কার এর মতো নানা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। আজীবন তিনি কলকাতার ঢাকুরিয়ার বাড়িতে বসে লেখালেখি চালিয়ে গিয়েছেন। সেখানেই ২০১৫ সালের ১২ই মে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পরলোকগমন করেন সুচিত্রা ভট্টাচার্য।


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন →
বই সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাসা বা মতামত থাকলে আমাদেরকে জানান
শেয়ার করুন

লেখকের অন্য বইসমূহ

প্রকাশকের অন্য বইসমূহ