উড়ো মেঘ, অলীক সুখ

৳ 250.00

লেখক সুচিত্রা ভট্টাচার্য
প্রকাশক আনন্দ পাবলিশার্স (ভারত)
আইএসবিএন
(ISBN)
9788177562095
ভাষা বাংলা
পৃষ্ঠার সংখ্যা ২৬৪
সংস্কার 8th Printed, 2015
দেশ ভারত

‘উড়ো মেঘ, অলীক সুখ’ বই এর ফ্ল্যাপের লেখা
নামী স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ কিংশুকের জীবন সুখের, কিন্তু নিস্তরঙ্গ। বাবা-মা, স্ত্রী রম্যাণি ও সন্তান তাতানকে নিয়ে পুরনো বাড়ির চেনা সংসারের মধ্যে হাঁপিয়ে ওঠে সে। এই পরিপার্শ্ব থেকে মুক্তি পেতে কিংশুক একটি সুন্দর ফ্ল্যাট কেনে। কিন্তু ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশনের দিনই তার এক রোগিণী কবিতা নার্সিংহোমে মারা যায়। খবর পেয়েও, স্বপ্নপূরণের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে কিংশুক পৌঁছতে পারে না কবিতার পাশে। স্ত্রী রম্যাণি আঙুল তোলে কিংশুকের গাফিলতির দিকে। বিষিয়ে যায় তাদের দাম্পত্যজীবন। তৈরি হয় এক সুখহীন নষ্টনীড় দ্বিতীয় কাহিনী দেয়াকে নিয়ে। কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ সৌম্যর স্ত্রী দেয়া সাংবাদিক। একদিন দেয়াকে তার কলেজের বন্ধু ঋতম গল্পচ্ছলে শিউলি নামে এক কিশোরীর করুণ জীবনকাহিনী শোনায়। এক মস্তান প্রেমের অভিনয়ে ভুলিয়ে মুম্বইয়ের গণিকাপল্লীতে শিউলিকে বিক্রি করে দিয়েছিল। সেখান থেকে শিউলি পালিয়ে এসেছে। অফিস থেকে শিউলির ওপর একটি প্রতিবেদন লিখতে বলা হয় দেয়াকে। খবর কাগজে শিউলির কথা বের হওয়ার পর তার মা কানন আত্মঘাতী হয়। নিঃসহায় শিউলিকে নিজের বাড়িতে দেয়া আশ্রয় দিতে বাধ্য হয়। সৌম্য-দেয়ার বিবাহবার্ষিকীর রাতে শিউলিকে নিয়ে বন্ধুবান্ধবরা ঠাট্টা-ইয়ার্কি আর রসালো আলোচনা শুরু করে। সৌম্য ক্রোধে ফেটে পড়ে শিউলির ওপর৷ পরদিন ভোর থেকে শিউলি নিখোঁজ। বিমূঢ় দেয়া খুঁজতে বেরোয় শিউলিকে। এবং নিজেকেও।

সুচিত্রা ভট্টাচার্য বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে আত্মপ্রকাশ করা একজন ভারতীয় বাঙালি সাহিত্যিক। সুচিত্রা ভট্টাচার্যের বই সমূহ পাঠকদের প্রবলভাবে টানতে পেরেছে সমসাময়িক মধ্যবিত্ত শহুরে জীবনের টানাপোড়েন, পরিবর্তনশীল মূল্যবোধ আর নৈতিক অবক্ষয়কে ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমে। সেই সাথে নারীর জীবনের দুঃখ-যন্ত্রণা, অনুভূতিগুলোও ছিলো সুচিত্রা ভট্টাচার্য এর বই সমগ্র’র আরেক উপজীব্য বিষয়। সুচিত্রা ভট্টাচার্য ১৯৫০ সালের ১০ই জানুয়ারি বিহারের ভাগলপুরে মামারবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও লেখিকার বাবার বাড়ি ছিলো মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরে। কিন্তু লেখিকার স্কুল ও কলেজ জীবনের পুরোটাই কাটে কলকাতা শহরে। কলকাতার যোগমায়াদেবী কলেজ থেকে তিনি স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে যান উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষালাভের সময়ই তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। কর্মজীবনে প্রথমে বিভিন্নস্থানে চাকরি করে সরকারি চাকরিতে থিতু হন। কিন্তু ২০০৪ সালে পুরোপুরিভাবে লেখালেখিতে মনোনিবেশ করার জন্য চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে দেন। প্রায় সাড়ে তিন দশকের দীর্ঘ সাহিত্যিক জীবনে সুচিত্রা ভট্টাচার্য অসংখ্য ছোটগল্প ও চব্বিশটি উপন্যাস রচনা করেছেন। তিনি বাংলা সাহিত্যে ‘মিতিন মাসি’র মতো নারী গোয়েন্দা চরিত্র সৃষ্টি করে গিয়েছেন যা পাঠকদের কাছে আজও সমান জনপ্রিয়। সুচিত্রা ভট্টাচার্যের ছোটগল্পগুলো দিয়েই মূলত তিনি সাহিত্যে প্রবেশ করেন। কিন্তু তাঁর রচিত উপন্যাসগুলো তাঁকে লেখক হিসেবে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কাছের মানুষ, দহন, কাচের দেওয়াল, হেমন্তের পাখি, নীল ঘূর্ণি, অলীক সুখ, গভীর অসুখ, উড়ো মেঘ, ছেঁড়া তার, আলোছায়া, অন্য বসন্ত, পরবাস, পালাবার পথ নেই, আমি রাইকিশোরী ইত্যাদি। সুচিত্রা ভট্টাচার্যের উপন্যাস গল্প ‘দহন’ অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মাতা ঋতুপর্ণ ঘোষ ১৯৯৭ সালে একই নামে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এছাড়াও লেখিকার উপন্যাস অবলম্বনে ‘ইচ্ছে’, ‘রামধনু’, ‘অলীক সুখ’, ‘অন্য বসন্ত’ এর মতো বেশ কিছু জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। সাহিত্যে অবদানের জন্য এই বাঙালি নারী সাহিত্যিক কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুবনমোহিনী মেডেল (২০০৪), কথা পুরস্কার (১৯৯৭), তারাশংকর পুরস্কার (২০০০), দ্বিজেন্দ্রলাল পুরস্কার (২০০১), শরৎ পুরস্কার, ভারত নির্মাণ পুরস্কার, সাহিত্য সেতু পুরস্কার, শৈলজানন্দ স্মৃতি পুরস্কার এর মতো নানা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। আজীবন তিনি কলকাতার ঢাকুরিয়ার বাড়িতে বসে লেখালেখি চালিয়ে গিয়েছেন। সেখানেই ২০১৫ সালের ১২ই মে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পরলোকগমন করেন সুচিত্রা ভট্টাচার্য।


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন →
বই সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাসা বা মতামত থাকলে আমাদেরকে জানান
শেয়ার করুন

লেখকের অন্য বইসমূহ

প্রকাশকের অন্য বইসমূহ